সন্দেহের বশে ৩ ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর!

‘গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে’; ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানে ৩ ফিলিস্তিনির প্রাণহানীর কথা জানা গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও একজন ব্যক্তি মারাত্মক আহত হয়েছেন।11111111

 

উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকা ও পশ্চিমতীরে বেসামরিক হত্যার বিশ্ব ইতিহাসে ভয়াবহতার এক নৃশংস নজির স্থাপন করেছে ইসরায়েল। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি বাহিনীকে ফিলিস্তিনেদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর আইনি অধিকার দেওয়া হয়। তখন থেকে স্রেফ সন্দেহের বশে বিপুল সংখ্যক মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।

রবিবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে গুলিতে তিন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও তাদের বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, নিরাপত্তা বেষ্টনীর কাছে সশস্ত্র সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে তারা।

গাজাভিত্তিক মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠনগুলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ জোরালো করার পর থেকে সেখানকার বেসামরিক অঞ্চলে (বাফার জোন) উত্তেজনা বেড়েছে। শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে, গাজা থেকে তাদের দেশে তিনটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তার মধ্যে দুইটি রকেট আইরন ডোম বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত করা হয়েছে।

গত সপ্তাহেও চুরি করে ইসরায়েলে প্রবেশ চেষ্টার অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা বেষ্টনীর কাছে চার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে সেনাবাহিনী।

এ বছর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা তিনদিনের আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় কয়েক শ’ অবস্থানে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এক পর্যায়ে মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীর উদ্যোগে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল।

টানা এক যুগের ইসরায়েলি অবরোধে পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মূক্ত কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছে গাজা উপত্যকা। অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে গত বছর থেকে সীমান্তে সাপ্তাহিক বিক্ষোভ করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। তখন থেকে  এ পর্যন্ত সেখানকার বেসামরিক অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ২৭০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপ বহুদিন থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনে ইসরায়েলের গুলি চালানোর নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলি নৃশংসতা থামেনি।