অবশেষে ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি'র দেখা পেলো পরিবার

অবশেষে কাশ্মিরের ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের নেতা ওমর আবদুল্লাহ এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতির সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পেলো তাদের পরিবার। গ্রেফতারের প্রায় এক মাস পর কাশ্মিরের সাবেক এ দুই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি খবরটি জানিয়েছে।

ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি
গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের ঘোষণার মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে পাস হয় একটি বিলও। আর গত ৯ আগস্ট রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আইনে পরিণত হয় তা। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার বিপুলসংখ্যক স্বাধীনতাপন্থী ও ভারতপন্থী রাজনৈতিক নেতাকে। ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার আগেই সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে আটক করা হয়। তখন থেকে পরিবারের সদস্যরাও তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারছিলেন না।

সূত্রকে উদ্ধৃত করে এনডিটিভি জানিয়েছে, সম্প্রতি ওই দুই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। ওমর আবদুল্লাহর পরিবার এই সপ্তাহে দু'বার শ্রীনগরের হরি নিবাসে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তার বোন সাফিয়া এবং তার সন্তানদেরও শনিবার (৩১ আগস্ট) ২০ মিনিটের জন্য আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। ওমর আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাওয়ার আগে সাফিয়া এবং তার চাচি বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা তাদের ফোনে যোগাযোগের অনুমতি দিলে তারা  ১২ আগস্ট আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। ওমর আবদুল্লাহর বাবা এবং তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহকেও গৃহবন্দী করা হয়েছে, তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগেরও কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) মেহবুবা মুফতির সঙ্গে দেখা করেন তার মা ও বোন। পিডিপি সভাপতি মেহবুবা বর্তমানে  চেসমাশাহীতে পর্যটন বিভাগের একটি আবাসে রয়েছেন। ওই ভবন এখন সাব-জেল হিসাবেই ব্যবহার করা হচ্ছে।

সূত্রকে উদ্ধৃত করে এনডিটিভি আরও জানায়, ওমর আবদুল্লাহ বা মেহবুবা মুফতির দু'জনেরই কারও কেবল চ্যানেলে সংবাদ দেখা এবং সংবাদপত্র পড়ার সুযোগ নেই। তবে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের সিনেমা দেখার জন্য একটি ডিভিডি প্লেয়ার পাঠিয়েছেন। ৪৯ বছর বয়সী ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর তার কিন্ডল ট্যাবলেটে বই পড়েন এবং নিয়মিত হরি নিবাসের চত্বরে হাঁটেন।

যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তারা ধীরে ধীরে জম্মু ও কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ শিথিল করছে, তবে রাজনৈতিক নেতাদের শিগগিরই মুক্তি পাওয়ার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। রাজ্যপাল সত্য পাল মালিক সম্প্রতি কৌতুক করে বলেন যে, বন্দি ওমর আবদুল্লাহ এবং মেহবুবা মুফতির জন্য বন্দি থাকাই উপকারি, কারণ যখন তারা বের হবেন আরও বেশি ভোট পেতে পারবেন।