সিরিয়ায় সেনামুক্ত অঞ্চলে এক হাজার বেসামরিক নিহত

সিরিয়ার ইদলিবের বেসামরিকীকরণ বা সেনামুক্ত অঞ্চলে গত চারমাসে এক হাজারেরও বেশি বেসামরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বুধবার সংস্থার মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনরা মিশেল ব্ল্যাচেত বলেন, তারা ২৯ এপ্রিল থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯ জন বেসামরিকের নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করতে পেরেছেন। 

thumbs_b_c_abc3992d17dada777877f63a98ecf304

ইদলিব সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সর্বশেষ শক্তিশালী ঘাঁটি। ২০১৮ সালে সামরিক হামলা জোরালো করার মধ্য দিয়ে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল থেকে আসাদ বিদ্রোহীদের সরিয়ে দেওয়া হলে তারা ইদলিব প্রদেশে জড়ো হয়। ২০১৫ সাল থেকে শহরটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে বিদ্রোহীরা। তবে দৃশ্যত ভয়াবহ বিমান হামলার মাধ্যমে শহরটির নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিতে যাচ্ছে রাশিয়ার মিত্র আসাদ বাহিনী। ইরান ও রাশিয়া দুই দেশই পুরো সিরিয়ার ওপর আসাদ বাহিনীর কর্তৃত্ব দেখতে চায়। বিপরীতে আসাদ বাহিনীর হামলা থেকে বেসামরিক জনগণকে সুরক্ষার ওপর জোর দেয় তুরস্ক।

মিশেল ব্ল্যাচেত বলেন, নিহতের ৫৭২ জন পুরুষ, ২১৩ জন নারী এবং ৩০৪ জন শিশু। তিনি বলেন, মূলত বাশার আল আসাদ সরকারের বিমান ও স্থল অভিযানেই এই বেসামরিকরা প্রাণ হারিয়েছেন। এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫১টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

মানবাধিকার কমিশনার বলেন, ‘এই সংখ্যা যে কতটা ভয়াবহ, লজ্জাজনক ও দুঃখজনক আমার তা আলাদা করে কিছু বলার নেই।’ যুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে রাজনৈতিক ভিন্নতা ভুলে এই সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।

সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীতধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া-ইরানও আইএস এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ছায়াযুদ্ধে মেতে উঠেছে বলে অনেকেই মনে করেনৃ।