‘জাকির নায়েক মালয়েশিয়ার ঐক্য বিনষ্ট করছেন’

বিতর্কিত ইসলামি বক্তা জাকির নায়েকের করা মানহানি মামলায় পুলিশের কাছে জবাববন্দি দিয়েছেন দেশটির একজন পার্লামেন্ট সদস্য। চার্লস সান্তিয়াগো নামে ক্লাংয়ের ওই আইনপ্রণেতা সোমবার প্রায় তিন ঘণ্টা পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, জাকির নায়েককে মালয়েশিয়ার ঐক্য বিনষ্টকারী আখ্যা দিয়েই আইনি জটিলতায় পড়েছেন। তবে আইনপ্রণেতা হিসেবে এমন মন্তব্যের এখতিয়ার তার রয়েছে।

_106766318_gettyimages-656726978-1

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্যের জেরে ওই দেশ থেকে জাকির নায়েকের আশ্রয় বাতিলের প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে। এ ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে। এরইমধ্যে দুইবার পুলিশি জেরার মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। একই ঘটনায় মানহানির অভিযোগ এনে গত ১৬ আগস্ট দেশটির এক মন্ত্রীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন জাকির। তার দাবি, ওই পাঁচ জন তার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ উপস্থাপন করে তার ভুল ব্যাখ্যা করেছেন।

জাকিরের মামলায় অভিযুক্তরা হলেন কেন্দ্রীয় সরকারের জনসম্পদমন্ত্রী কুলাসেগারান, সাবেক রাষ্ট্রদূত ডেনিস ইগনাশিয়াস, পেনাং রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পি রামাসামি, বাগান দালামের প্রতিনিধি সাতিস মুনিয়ান্দি এবং ক্লাংয়ের আইনপ্রণেতা চার্লস সান্তিয়াগো। রামাসামি ও মুনিয়ান্দিকে গত ১১ সেপ্টেম্বর (বুধবার) জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আজ (সোমবার) জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সান্তিয়াগোকে।  

সান্তিয়াগো জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। একটি জাকির নায়েক নিজেই করেছেন এবং আরেকটি মামলার বাদী ছিল ৩০০ জনের একটি গ্রুপ। তিনি বলেন, ‘একজন বিদেশিকে আমাদের ঐক্য বিনষ্টের অনুমতি দিয়েছি আমরা। এই ঐক্য বছরের পর বছর ধরে তৈরি হয়েছিলো।’ তার দাবি, মন্ত্রিসভায় এমন মন্তব্যের কারণেই আইনি প্রক্রিয়ায় পড়েছেন তিনি। বলেছেন,  ‘আমি আমাদের ঐক্যের জন্য লড়াই করছি আর আমাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর কোনও মানেই হয় না। একজন এমপি হিসেবে ঐক্য নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব।’

প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই জিজ্ঞাসাবাদে তাকে ২২টি প্রশ্ন করে পুলিশ। সান্তিয়াগো জানান, ওই পুলিশ কর্মকর্তা পেশাদার আচরণ করেছে। তার আইনজীবী জন ফাম দাবি করেন, এমপি হিসেবে মন্ত্রিসভায় পরামর্শ দেওয়া তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।  

মালয়েশিয়ায় ধর্ম ও জাতিগত ইস্যুকে স্পর্শকাতর বিবেচনা করা হয়। দেশটির ৬০ শতাংশ মানুষ মুসলমান আর বাকিরা চীন ও ভারতের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এদের বেশিরভাগই সনাতন ধর্মাবলম্বী। সম্প্রতি জাকির মন্তব্য করেছেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের চেয়ে মালয়েশিয়ায় থাকা সংখ্যালঘু হিন্দুরা শতগুণ বেশি অধিকার ভোগ করছেন। তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী হিন্দুরা মাহাথিরের নয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সমর্থক।