সেনা নির্যাতনের শিকার কাশ্মিরি কিশোরের আত্মহত্যা

সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে কাশ্মিরের এক কিশোর। জোবায়ের আহমেদ ভাট নামের ওই কিশোর বিষপান করেছিল। তার পরিবার ও স্বজনদের দাবি, মৃত্যুর আগে সে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে নির্যাতিত হওয়ার কথা বলে গেছে। স্থানীয়রাও সেনাবাহিনীর হাতে তাকে নিপীড়িত হতে দেখেছেন। তবে জোবায়েরকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনারা।  indian_army_torture_in_khashmir_desh_rupantor

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপকে ঘিরে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। অভিযোগ উঠেছে, এরপর থেকেই সেখানে সংবাদমাধ্যমের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে বেসামরিক মানুষের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। নির্যাতনের শিকার হয়ে কয়েকজনের মৃত্যুর খবরও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এসব স্বীকার করছে না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ১৫ বছর বয়সী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জোবায়ের পুলওয়ামার চন্দগাম গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে ফিরে বিষ পান করে সে। তাকে শ্রী মহারাজা হরিসিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সে মারা যায়। পরিবারের অভিযোগ, তাকে পার্শ্ববর্তী তাহাব গ্রামের একটি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় সেনা সদস্যদের হাতে অকথ্য নির্যাতনের শিকার হয় ওই ছেলে। বাড়িতে ফিরে আসার কয়েক ঘণ্টা পরই বিষপান করে সে। সেনাবাহিনীর দাবি, এ ধরনের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। ওই কিশোরকে আটক বা মারধর করা হয়নি। তবে গ্রামবাসীও বলছে, তাকে সেনারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল।

গ্রামবাসী জানিয়েছে, জোবায়েরকে তুলে নেওয়ার আগের দিন তাদের এলাকায় গ্রেনেড হামলা হয়। সেই উত্তেজনার মধ্যেই স্থানীয় কিছু ছেলে সেনা সদস্যদের আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। সেই ঘটনার জেরে তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। জোবায়েরের বাবা জানান, বাড়িতে ফিরে সে তার বোনকে সেনা সদস্যদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার কথা জানিয়েছিল। এ নিয়ে সারাদিন হতাশাগ্রস্ত ছিল সে।

জোবায়েরের চাচাতো ভাই দাবি করেন, সে যে  সেনা সদস্যদের নির্যাতনের কারণে বিষ খেয়েছে, সে কথা আমাকে জানিয়েছিল। এমনকি বিষপানের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়  ও যেতে চাইছিল না। তার কথায়, কাশ্মিরে অত্যাচার চলছে।

নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এ ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।