সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে পার্লামেন্টের ওপর স্থগিতাদেশ অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পর আজ (বুধবার) আবারও অধিবেশন বসবে। অধিবেশন সামনে রেখে পার্লামেন্টে ফিরতে শুরু করেছেন আইনপ্রণেতারা। এদিকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন। লেবার পার্টির শীর্ষ নেতা বলেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে সৃষ্ট সংকট সমাধানের পর যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
মঙ্গলবার চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঘিরে অচলাবস্থা কাটাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রুল জারি করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। স্থগিতাদেশ অকার্যকর হওয়ায় পার্লামেন্টে ফিরতে শুরু করেন ব্রিটিশ এমপিরা। স্পিকার জন বারকো জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় অধিবেশন বসবে। এতে প্রধানমন্ত্রীর কোনও প্রশ্নোত্তর পর্ব না থাকলেও, জরুরি প্রশ্ন, মন্ত্রীর বিবৃতি ও জরুরি বিতর্কের শুনানি হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ‘সম্পূর্ণ দ্বিমত’ পোষণ করলেও তা মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিউ ইয়র্কে চলমান জাতিসংঘ সম্মেলনের সফর সংক্ষিপ্ত করেই দেশে ফিরে এসেছেন তিনি।
এদিকে সার্বিক এ পরিস্থিতিতে বিতর্কিত বরিসকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেরেমি করবিনসহ বিরোধীরা। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের পার্লামেন্ট স্থগিতাদেশ বাতিলের পর বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে করবিন প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পরে তিনি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, দেশকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বরিস জনসন। তার এখনই পদত্যাগ করা উচিত।
ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নেরও ইঙ্গিত দেন তিনি।
মঙ্গলবার জনসন সরকারের ব্রেক্সিটনীতির বিরোধীরা পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব তোলেন। এই প্রস্তাবে যুক্তরাজ্যের স্বার্থরক্ষায় চুক্তি চূড়ান্ত করতে ব্রেক্সিট আরও পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। ওই প্রস্তাব পাস হলে হেরে যান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার পর বরিস জনসন আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব আনার কথা জানান। বন্ধ করে দেন পার্লামেন্ট অধিবেশন।