হুথিদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে সৌদি আরবের প্রতি ইরানের আহ্বান

ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তেহরান। সম্প্রতি সৌদির তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর ২০ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা বন্ধের ঘোষণা দেয় ওই সশস্ত্র গোষ্ঠী। সৌদি জোটের হামলা বন্ধে হুথিদের দেওয়া প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি বলেছেন, এ প্রস্তাব মেনে নিলে তা (যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব) মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।

4bsl3ff3892ef01i1e4_800C450

গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় স্বীকার করলেও এ ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করা হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান। এই ঘটনার জেরে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরও সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পরে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় ওই সশস্ত্র গোষ্ঠী। তখন রিয়াদ জানিয়েছিল, কথায় নয়, হুথিদের কাজে বিশ্বাস করবে সৌদি। পরে অবশ্য রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সৌদির নাজরানে ইয়েমেন সীমান্তে হামলার দাবি করে হুথিরা।

সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি এক বিবৃতিতে বলেন, আন্তর্জাতিক সমাজ ইয়েমেনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও দুঃখজনকভাবে সৌদি বাহিনী এখনও ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকায় বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ও যুদ্ধের দাবানল জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তেহরান রিয়াদকে ইয়েমেনের প্রস্তাব মেনে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন বন্ধ এবং যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার যেকোনও প্রস্তাবের প্রতি তেহরানের সমর্থন রয়েছে। ইরান মনে করে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে হলে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করার ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী সানা দখলে নেয় ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে পালিয়ে যান হাদি। ২০১৫ সালের মার্চে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে কোটি কোটি মানুষ।