উইঘুর নিপীড়নে অভিযুক্ত চীনা কর্মকর্তাদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়নে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। একই অভিযোগে গত সোমবার চীনের ২৮ কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্তির পর ভিসা বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন সরকার চরম নিপীড়নমূলক অভিযানকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করে ফেলেছে। তবে উইঘুরদের ওপর নির্যাতনের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীন।

_109157578_uighurs

জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ উইঘুর মুসলিম। এই প্রদেশটি তিব্বতের মত স্বশাসিত একটি অঞ্চল। বিদেশি মিডিয়ার সেখানে প্রবেশের ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে, সেখানে বসবাসরত উইঘুরসহ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ব্যাপক হারে আটকের শিকার হচ্ছে। চীনে হান চাইনিজরা সংখ্যাগুরু। তাদের তুলনায় মুসলিম উইঘুরদের সংখ্যা নগন্য। 

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, উইঘুর, কাজাখসহ অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালায় চীন সরকার। শিবিরগুলোতে ব্যাপকহারে তাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে, সেখানে তাদের ওপর উচ্চ-প্রযুক্তির নজরদারি রয়েছে। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের কারণে নির্যাতন করা হয় তাদের।

যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ চীনা সরকার, কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর প্রযোজ্য হবে। তবে চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের ইতিহাস রয়েছে।

বিবৃতিতে, জিনজিয়াং প্রদেশে নির্যাতনমূলক শিবির বন্ধ, উইঘুরদের বন্দিদের মুক্তি, তাদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বন্ধ ও বাইরে অবস্থানকারীরা দেশে ফিরলে ‘অনিশ্চিত ভাগ্য’ মোকাবিলার পথ বন্ধ করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে ওই সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে তা অস্বীকার করে বেইজিং। ভিসা বাতিল ও ২৮টি কোম্পানি নিষিদ্ধ করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। গত সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং চুয়াং বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে তথাকথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলেছে, সেখানে এমন কিছুই ঘটেনি। এটা চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওয়াশিংটনের হস্তক্ষেপের অজুহাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’

মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানায়, চীন অনেকদিন ধরেই উইঘুরদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে এবং আটককেন্দ্র আটক রাখছে। আর চীনের দাবি এগুলো উন্মুক্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। উগ্রবাদ মোকাবিলায় এই কেন্দ্র পরিচালিত হয়।