আল-আকসায় ইহুদিদের প্রার্থনার অনুমতি দিতে যাচ্ছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী গিলাদ এরদান বলেছেন, আল-আকসা মসজিদে শিগগিরই ইহুদিদের প্রার্থনার অনুমতি দেওয়া হবে। দেশটির ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম ‘ম্যাকর রিশন’র অনুরোধের পর শুক্রবার ওই সম্ভাবনার কথা জানান ওই মন্ত্রী। আরব৪৮ ডটকমের বরাত দিয়ে এখবর জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিক্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিডলইস্টমনিটর।

2019_8-11-Israeli-forces-attack-Palestinian-worshipers-in-Al-Aqsa20190811_2_37730885_46729337

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণটি একইসঙ্গে মুসলিম ও ইহুদিদের জন্য পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। মুসলিমরা একে আল হারাম আল শরিফ নামে ডেকে থাকেন। আর ইহুদিরা এ স্থানটিকে ডাকেন টেম্পল মাউন্ট নামে। ১৯৬৭ সালে যখন ইসরায়েল ওই এলাকা দখল করে তখন শুধু মুসলিমরাই আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারতো। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় প্রার্থনার সুযোগ পেতেন ইহুদিরা।

ইসরায়েলি মন্ত্রী এরদান বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, এটা শিগগিরই ঘটবে। স্রষ্টার ইচ্ছায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘জেরুজালেমের পরিস্থিতি স্থানটির নিয়ন্ত্রণ ও সার্বভৌম ক্ষমতা অর্জনের দিকে যাচ্ছে। আমরা যখন আমাদের লক্ষ্যে (ইহুদিদের জন্য আল-আকসার দরজা খোলা) পৌঁছাব, তখন টেম্পল মাউন্টে প্রবেশ করে তারা তাদের প্রার্থনা করতে পারবে। আমি আশা করছি, এটি শিগগিরই ঘটবে।’

এরদান আরও বলেন, যখন আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছাব তখন ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক স্বার্থের আলোকে জেরুজালেমের ঐতিহাসিক অবস্থানের স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের জন্য কাজ করব আমরা।

ইসরায়েলের ওই মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগাম বলতে পারি না যে, ঠিক কখন এটি ঘটবে। কারণ এটা আমাদের শক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমি আশা করি এটা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ঘটবে। তবে তা এক দশকের বেশি নয়।’

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ও কুটিল আঞ্চলিক পরিস্থিতি আমাদের বিবেচনা করা উচিত। আমি জর্ডানের সঙ্গে করা শান্তিচুক্তির প্রতি সম্মান করি। বিবেচনা করি এটা গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। তাই বলে একটি ঐতিহাসিক ভুলকে মেনে নেওয়া অসম্ভব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওই চুক্তির মূলনীতিও পরিবর্তিত হবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটা করতে কোনও আইনি বাধা নেই। তবে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের সমর্থন থাকতে হবে।

১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে শতাধিক বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত প্রায় ১৪০টি বসতিতে ৬ লাখেরও বেশি ইসরায়েলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও ইসরায়েল তা মানতে চায় না।