অর্ধশতাব্দীর প্রথা ভাঙলো বুকার

অর্ধশতাব্দীর প্রথা ভেঙ্গে প্রথমবারের মতো এক কৃষ্ণাঙ্গের হাতে উঠলো ইংরেজি সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বুকার। ৬০ বছর বয়সী ব্রিটিশ লেখক বার্নারডাইন এভারইসটো (৬০) তার ‘উইমেন’ বইয়ের জন্য এই পুরস্কার পান। তবে আরেকটি প্রথাও ভাঙতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। যৌথভাবে দুজনকে পুরস্কার দিতে হয়েছে তাদের। কর্তৃপক্ষ জানায়, অনেক চেষ্টা করেও একজনকে বেছে নিতে পারেননি বিচারকরা। বার্নারডাইনের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার কানাডিয়ান ঔপন্যাসিক মার্গারেট অটউড(৭৯)। তার উপন্যাসের নাম ‘দ্য হ্যান্ডমেইডস টেল’।

_109236753_atwood

১৯৬৯ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। বুকারের ইতিহাসে এটি মাত্র তৃতীয়বার যৌথভাবে পুরস্কার জেতার ঘটনা। ১৯৯৩ সালে নিয়ম করা হয়েছিল, এই পুরস্কার আর কখনোই ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে না। তবে সেটা রক্ষা করতে পারেননি বিচারকরা।

বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের সাহিত্য বিষয়ক পরিচালক গ্যাবি উড বলেন, বুকারের বিচারকেরা টানা পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সংক্ষিপ্ত তালকায় থাকা জনপ্রিয় বইগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে বুঝতে পারেন, এর মধ্য থেকে একজন বিজয়ী বের করা অসম্ভব।

বুকার পুরস্কারের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, এর আগে মাত্র দু’বার বুকার পুরস্কার ভাগাভাগির ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৪ সালে নাদিন গোরডাইমার ও স্ট্যানলি মিডলটন এবং ১৯৯২ সালে মাইকেল ওন্দাজে ও ব্যারি আন্সওর্থ যৌথভাবে এ পুরস্কার জেতেন।

অন্যদিকে এর আগে সংক্ষিপ্ত তালিকায় কৃষ্ণাঙ্গ লেখকের উপস্থিতি থাকলেও কখনও মূল পুরস্কার পাননি কেউ। সেদিক দিয়ে রেকর্ড গড়েছেন বার্নার্ডাইন।    তিনি বলেন, এমন অনেক পুরষ্কারই আছে যেগুলো নির্দিষ্ট কোনও গোষ্ঠীর মানুষ পায় না। এবং এটা সত্যি যে কৃষ্ণাঙ্গরা সাহিত্যে খুব বেশি পুরস্কার পায় না। এটা কেউ খেয়াল না করলেও ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

এই লেখিকা বলেন, এর আগে কখনও কৃষ্ণাঙ্গ নারী এই পুরস্কার পায়নি। মাত্র চারজন সংক্ষিপ্ত তালিকায় ঠাই পেয়েছিলেন। কিন্তু কখনও পুরস্কার হাতে উঠেনি। আমি আশা করি পরবর্তীতে আরও কৃষ্ণাঙ্গ নারী এই পুরস্কার পাবেন।

অন্যদিকে রেকর্ড করেছেন অ্যাটউডও। কানাডিয়ান এই লেখক এর আগে ২০০০ সালে তার ব্লাইন্ড অ্যাসাসিয়ান বইয়ের জন্যও বুকার জিতেছিলেন। দুটি বুকার পাওয়ার তালিকায় তিনি চতুর্থ। এছাড়া সবচেয়ে বয়স্ক বুকারজয়ীর রেকর্ডও গড়েছেন ৭৯ বছর বয়সী মার্গারেট অটউড। 

চলতি বছর বুকার পুরস্কারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল ছয়জনের নাম। বুকার পুরস্কারের সাহিত্য পরিচালক বিচারকদের বারবার অনুরোধ করেছিলেন যাতে যেকোনো একজনকে দেওয়া হয় ইংরেজি সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কারটি। তবে বিচারকরা সে নিয়ম রক্ষা করতে পারেননি।