অভিবাসীদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করবে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের জন্য নতুন একটি আইনি প্রস্তাব ঘোষণা করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন এমন কোনও ব্যক্তি সীমান্তে আটক হলে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সোমবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ঘোষণায় বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো এই নমুনা সংগ্রহ করবে। তবে আনুষ্ঠানিক প্রবেশ পয়েন্ট দিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে আটক ব্যক্তিরাও নতুন নিয়মের আওতায় পড়বেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।noname

২০০৮ সালে সংশোধিত এক আইন অনুযায়ী কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি অপরাধের কারণে গ্রেফতার হলে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। একই আইনের মাধ্যমে অভিবাসীদেরও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা যায়। তবে এক্ষেত্রে সরঞ্জামজনিত সীমাবদ্ধতা ও প্রশাসনিক জটিলতা এড়াতে বিষয়টি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের বিচক্ষণতার ওপর নির্ভর করে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতর মনে করলে কোনও অভিবাসীর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিতে পারে, আবার প্রয়োজন মনে করলে তা বাদও দিতে পারে।

তবে বর্তমান প্রস্তাবে সব ব্যতিক্রম বাদ যাবে। এতে ফেরত পাঠানোর অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের নমুনাও যেরকম সংগ্রহ করা হবে তেমনি অপরাধে অভিযুক্ত না হলেও তারও ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। ডিএনএ সংগ্রহের সরঞ্জাম সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। তারা এসব নমুনা বিশ্লেষণ করবে আর গোপনীয়তার নীতি অনুসরণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যেন এই ফলাফল ব্যবহার করে তা নিশ্চিত করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিশ্বাস নতুন এই নিয়মের ফলে যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া দেশের মধ্যে প্রবেশকারীদের আরও ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে পারবেন সীমান্ত কর্মকর্তারা। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জেফরি এ রোজেন বলেন, জীবন রক্ষা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে সাহায্য করবে এই প্রস্তাবিত আইনি পরিবর্তন। তিনি বলেন, এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো নিরপরাধ মানুষদের শাস্তি পাওয়ার সংখ্যা কমানো। 

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ এজেন্ডা হলো অভিবাসী সংখ্যা সীমিত করা। সেই নীতি অব্যাহত রেখেছেন তিনি। আর তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাওয়া মানুষের ঢল সামলাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। কেবল গত অর্থবছরেই সীমান্ত থেকে আট লাখ দশ হাজারেরও বেশি মানুষ আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। নতুন নিয়মের ফলে এখন লাখ লাখ অভিবাসীর বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

এ মাসের শুরুতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের এই পরিকল্পনার কথা জানান। ওই সময়ে নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের অলাভজনক সংস্থা আমেরিকান লিবার্টিজ ইউনিয়ন একটি বিবৃতি দেয়। এতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নাগরিক স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ডিএনএ কেবল আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যই প্রকাশ করে না, বরং এতে আমাদের স্বজনদের সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যায়। এর অর্থ হলো প্রশাসনের বর্ণবাদী অভিবাসন নীতি অন্য দেশে বা এই দেশে বসবাসরত পরিবারের সদস্যদের অধিকারের ওপরও প্রযোজ্য হবে।