মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক অচলাবস্থার মুখে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি

ভারতের মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে রাজ্যটিতে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়েছে। রাজ্যপাল ভগত সিং কেশিয়ারির প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি শাসনের সবুজ সংকেত দেন প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। তবে এ নিয়ে রাজ্যটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।12
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি, শিবসেনা, এনসিপি, তিন দলকেই সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানান রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। তবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে পারেনি কেউ। কেন্দ্রীয় সরকারকে এই রিপোর্ট দেওয়ার পরই মঙ্গলবার রাজ্যটিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। এদিন সকাল ১১টায় রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলে এনসিপি। তারাও আরও সময় চায়। শিবসেনাকে সমর্থন নিয়ে এনসিপি ও কংগ্রেসের আলোচনা চলার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি শাসনের সিদ্ধান্ত আসে।

সরকার গঠনের দাবি জানাতে শিবসেনা ব্যর্থ হয়ে তিনদিন অতিরিক্ত সময় চায়। তা দিতে চাননি রাজ্যপাল। তারপরেই সোমবার সন্ধ্যায় সরকার গঠনের জন্য এনসিপিকে আহ্বান করা হয়।

শেষ মুহুর্তে সর্মথনের চিঠি দিয়ে যখন শিবসেনা যখন রাজ্যপালের দরবার যাওয়ার জন্য প্রস্তুত তখন কংগ্রসের তরফে জানানো হয় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বরং এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন।

এনসিপি নেতা তথা শরদ পাওয়ারের ভাতিজা অজিত পাওয়ার বলেন, সোমবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত, কংগ্রেসের চিঠির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আমাদের নেতা শরদ পাওয়ার, প্রফুল্ল প্যাটেলরা।

এদিকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শিবসেনা। তাদের অভিযোগ, বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য দুইদিন সময় দেওয়া হলেও তাদের কোনও সময় দেওয়া হয়নি। শিবসেনার হয়ে সওয়াল করেন আইজীবী ও কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল।

সোমবারও সরকার গঠন নিয়ে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তারপরই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের মুম্বাই পাঠান তিনি।

শিবসেনার সঙ্গে সরকার গঠনের পক্ষে ছিলেন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতারা। তবে শিবসেনার সঙ্গে দলীয় নেতৃত্ব বিশেষ করে সোনিয়া গান্ধীর আদর্শগত ভিন্নতা রয়েছে। এমনকি নির্বাচনে মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্রে যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই ছিল তাদের সঙ্গে জোট করা নিয়ে উদ্বেগ ছিল কংগ্রেস শিবিরে। তাদের আরও উদ্বেগ, বিজেপির ৩০ বছরের সঙ্গী শিবসেনা। ফলে তাদের এই বিচ্ছেদ চিরস্থায়ী হবে না।

এনডিএ থেকে তাদের প্রস্থানের বার্তা দিয়ে, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন শিবসেনার একমাত্র মন্ত্রী। বিজেপি থেকে শিবসেনার আলাদা হয়ে যাওয়া ছিল এনসিপির বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার শর্ত। তবে জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়ে দেয় এনসিপি।

অজিত পাওয়ার বলেন, যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে, তা হবে একসঙ্গে। সে কারণে আমরা কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছিলান। কিন্তু তারা আসেনি। আমরা এ নিয়ে একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই, আমরা একসঙ্গেই রয়েছি। কংগ্রেস সময় নিচ্ছে। কারণ, আমরা শিবসেনার সঙ্গে লড়াই করিনি। সূত্র: এনডিটিভি।