ভারতের ওড়িশা রাজ্যের পুরীতে ঐতিহাসিক জগন্নাথ রথযাত্রার সময় পদদলিত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ১০ জন। রবিবার (২৯ জুন) ভোর চারটার দিকে পুরীর সারধা বালিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যখন জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার তিনটি রথ শ্রীগুন্ডিচা মন্দিরের কাছে পৌঁছেছিল। ওই মন্দিরটি জগন্নাথ মন্দির থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে।
ভোরে রথগুলো যখন গুণ্ডিচা মন্দিরের কাছে যায় তখন ‘দর্শন’-এর জন্য বিশাল জনতা জড়ো হয়। ভিড় ক্রমে বেড়ে গেলে হঠাৎ কিছু মানুষ পড়ে যান এবং শুরু হয় পদদলিত হওয়ার ঘটনা।
ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। জানা গেছে, তিনজনই খুরদা জেলার বাসিন্দা। রথযাত্রায় অংশ নিতে পুরীতে এসেছিলেন তারা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা যথেষ্ট ছিল না। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
পুরী জেলার কালেক্টর সিদ্ধার্থ শংকর স্বাইন জানিয়েছেন, ‘মৃতদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু জনতার আচমকা চাপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।’
রথযাত্রা উপলক্ষে প্রতিবছর ওড়িশার উপকূলীয় শহর পুরী প্রাণ ফিরে পায়। হিন্দুদের বিশ্বাস, এটি ভগবান বলরাম, ভগবান জগন্নাথ এবং দেবী সুভদ্রার শতাব্দীপ্রাচীন এক রথ উৎসব। এই দেবতাদের মহিমান্বিত কাঠের রথে বসিয়ে ভক্তরা আনুষ্ঠানিকভাবে টেনে নিয়ে যান দ্বাদশ শতকের শ্রী জগন্নাথ মন্দির থেকে শ্রীগুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত। সেখানেই দেবতারা এক সপ্তাহ অবস্থান করেন। এরপর তাঁরা আবার জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে যান।
ওডিশার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেন, ‘রথযাত্রার সময় ভয়াবহ ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরপরই আজকের পদদলনের ঘটনা প্রমাণ করে যে ভক্তদের জন্য শান্তিপূর্ণ উৎসব নিশ্চিত করতে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
নবীন পট্টনায়কের নাম উল্লেখ না ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন বিজেডিকে ‘রাজনৈতিক মন্তব্য’ করার জন্য সমালোচনা করেছেন।