ডিআর কঙ্গোয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে হামলা

বিদোহীদের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গোয় (ডিআর কঙ্গো) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি উপেক্ষা করে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগুন। সোমবার পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনিতে এই হামলায় জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি কার্যালয় ও গাড়ি পুড়ে গেছে, চালানো হয়েছে লুটপাট। এছাড়াও স্থানীয় মেয়রের কার্যালয়েও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।হামলার পর বেনির জাতিসংঘ কার্যালয় থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে

রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাতে ডিআর কঙ্গোর উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহরে বিদ্রোহীদের চালানো হামলায় আট বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয়রা। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকালে বেনির মেয়রের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। দেশটির পুলিশ বাহিনীর টুইটারে প্রকাশ করা ছবিতে সেখান থেকে আগুন ও ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। পরে বিক্ষোভকারীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সদর দফতর অভিমুখে রওনা দেয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার নাগরিক সমাজের নেতা টেডি কাডালিকো। তিনি জানান, সদর দফতরের কয়েকটি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি লুটপাট চালানো হয়। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বেনির বাসিন্দারা জাতিসংঘের বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি করছে বলে জানান তিনি।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা জাতিসংঘের কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে পুলিশ ও শান্তিরক্ষা মিশনের সেনারা তাদের প্রতিহতের চেষ্টা করে। সেসময় জাতিসংঘ কার্যালয়ের বাইরে গুলির শব্দ শোনা গেছে। আশেপাশের এলাকায় নিহত হয়েছে দুই বিক্ষোভকারী। বেনি থেকে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া হামলায় শান্তিরক্ষা মিশন সদর দফতরের মূল ভবনের দেয়ালের অর্ধেক ভেঙে গেছে। পরে বিক্ষোভকারীদের ওই গ্রুপটি স্থানীয় বিমানবন্দরে অবস্থিত জাতিসংঘের আরেকটি সামরিক ঘাঁটির দিকে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।বিক্ষোভকারীরা জাতিসংঘের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়

বিক্ষোভকারী টনি মুমবেরে বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ করছি। কারণ আমাদের কেউ সুরক্ষা দিচ্ছে না। আমাদের নিরাপত্তা দিতে সরকারি ও জাতিসংঘ বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে।’ আরেক বিক্ষোভকারী জোনাস ক্যামবেলে বলেন, ‘তাদের (শান্তিরক্ষা মিশন) হয় আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে নয় আমাদের দেশ ত্যাগ করতে হবে। আমরা মারা যাচ্ছি, আর তারা শুধু দেখছে। তারা এখানে আছে কী করতে’?

১৯৯৯ সাল থেকে ডিআর কঙ্গোয় মোতায়েন রয়েছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন। বাংলাদেশসহ বহু দেশের সেনা সদস্যদের নিয়ে গঠিত ওই মিশন সেখানে নিয়োজিত রয়েছে। দেশটিতে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তবে রবিবার রাতে বেনি শহরে কোন গ্রুপটি হামলা চালিয়েছে তা নিশ্চিত নয়। তবে শহরটিতে প্রায়ই সম্মিলিত গণতান্ত্রিক বাহিনী (এডিএফ) নামে একটি গোষ্ঠী হামলা চালিয়ে থাকে। সাম্প্রতিক হামলার জন্যও তাদের দায়ী করেছে স্থানীয় পুলিশ। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত মাসে কঙ্গোর সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলে এসডিএফ বিরোধী অভিযান শুরুর পর ৬০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।