ইয়েমেনে ইরানপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত সৌদির

ইয়েমেনের শাসন ব্যবস্থায় ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী সশস্ত্র হুথি বিদ্রোহীদের মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি আরব। শুক্রবার ইতালির রাজধানী রোমে ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোর এক সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের এমন ইঙ্গিত দেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।
সম্মেলনে আদেল আল জুবায়ের বলেন, ভবিষ্যৎ ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীসহ দেশটির সব নাগরিকের ভূমিকা থাকতে পারে।

ইয়েমেনের বিদ্যমান সংকট উত্তরণে একটি সমাধানে পৌঁছানোর ওপরও জোর দেন সৌদি প্রতিমন্ত্রী।

আদেল আল জুবায়ের দাবি করেন, ইয়েমেন সংকট সৌদি আরব তৈরি করেনি। বরং হুথি বিদ্রোহীরাই এ সংকট তৈরি করেছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে ইরানের হস্তক্ষেপকে ‘সর্বনাশা’ বলেও দাবি করেন সৌদি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, তেহরান পুরো অঞ্চলের জন্যই হুমকি। তাদের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড আর সহ্য করার মতো জায়গায় নেই।

সৌদি আরব এমন সময়ে হুথি বিদ্রোহীদের মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিলো যার কিছুদিন আগেই ২০০ হুথি বন্দিকে মুক্তি দেয় দেশটি। গত মাসের শেষ দিকে মুক্তি দেওয়া হয় তাদের। সৌদি সামরিক জোট জানিয়েছে, যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে সৌদি-ইয়েমেন সীমান্ত সংলগ্ন নজরান এলাকায় হামলা চালিয়ে সহস্রাধিক সৌদি সেনাকে আটকের দাবি করে হুথি বিদ্রোহীরা। সেনাদের পাশাপাশি শতাধিক সৌদি সামরিক যানও জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি তাদের। তবে ওই ঘটনায় আটক সৌদি সেনাদের মুক্তির জন্য এ বন্দিবিনিময়ের কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে সংবাদিক জামাল খাশোগির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন নিয়ে সমালোচনার মাত্রা বাড়তে থাকে।

২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী সানা দখলে নেয় দেশটির ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন ক্ষমতাচ্যুত হাদি। হুথির ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামের সামরিক আগ্রাসন শুরু করে সৌদি-আমিরাতের সামরিক জোট। স্কুল, বাজার ও হাসপাতাল, জানাজার নামাজসহ বিভিন্ন স্থানে সৌদি জোটের বিমান হামলায় নিহত হয় লক্ষাধিক বেসামরিক মানুষ। আহত হয় আরও অনেকে। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় ইয়েমেন।