লিবিয়া নিয়ে পরস্পরকে দায়ী করছে তুরস্ক ও ফ্রান্স

লিবিয়ায় অস্থিতিশীলতার জন্য ফ্রান্সকে দায়ী করেছে তুরস্ক। এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অভিযোগ করেন উত্তর আফ্রিকার দেশটির সংঘাত নিরসনে পূর্বে দেওয়া কথা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এভাবেই পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানে প্যারিস ও আঙ্কারা পরস্পরকে দায়ী করে।noname

লিবিয়ার সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে গত ১৯ জানুয়ারি বার্লিনে এক সম্মেলন আয়োজন করেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেল। ওই সম্মেলনে তুরস্ক, ফ্রান্সসহ আঞ্চলিক দেশগুলো লিবিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধের বিষয়ে একমত হন। এছাড়া জাতিসংঘের নেতৃত্বে লিবিয়ার ঐক্য প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়েও সম্মতি আসে ওই সম্মেলনে।

বুধবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কাইরিয়াকোস মিতসোতাকিসের সঙ্গে এক বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দাবি করেন, বার্লিন সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মানছে না তুরস্ক। তিনি বলেন, ‘এই গত কয়েক দিনে আমরা দেখেছি সিরীয় ভাড়াটে সেনা নিয়ে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ লিবিয়ার ভূখন্ডে পৌঁছেছে। আমরা বার্লিনে যেসব বিষয়ে সম্মত হয়েছিলাম এটা তার মারাত্মক এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন। এগুলো তার (তুরস্কের প্রেসিডেন্ট) কথা রাখতে না রাখার শামিল’।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের পর বুধবার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি আকসোয় এক বিবৃতিতে বলেন, ২০১১ সালে লিবিয়া সংকটের শুরু থেকে মূল দায়ী ফ্রান্স। তিনি বলেন, ‘একথা আর গোপন নেই যে, লিবিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেতে দেশটি হাফতারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছে’। তিনি বলেন, লিবিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাত হলো অন্য দেশের সঙ্গে মিলে হাফতারকে দেওয়া ফ্রান্সের সামরিক সহায়তা। হাফতার বাহিনী একটি বৈধ সরকারের ওপর হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তুর্কি মুখপাত্র বলেন, ‘ফ্রান্স যদি (বার্লিন) সম্মেলনের সিদ্ধান্তে অবদান রাখতে চায় তাহলে তাদের উচিত হবে প্রথমেই হাফতারকে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করা’।

২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই সহিংসতা আর বিভক্তিতে জর্জরিত হয়ে আছে লিবিয়া। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে দেশটিতে সক্রিয় রয়েছে দুটি সরকার। এর মধ্যে রাজধানী ত্রিপোলি থেকে পরিচালিত সরকারকে সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশ। তুরস্কের সমর্থনও এই সরকারের প্রতি। আর দেশটির পূর্বাঞ্চল থেকে পরিচালিত জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন অপর সরকারটিকে সমর্থন দিচ্ছে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, সৌদি আরব,ও ফ্রান্স। রাজধানী ত্রিপোলির দখল নিতে গত বছরের এপ্রিল থেকে অভিযান জোরালো করেছে হাফতার বাহিনী।

উল্লেখ্য, সিরিয়া এবং পূর্ব ভূমধ্যমাগরীয় এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে সম্প্রতি প্যারিস ও আঙ্কারার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।