ওষুধ ছাড়াই করোনা ভাইরাস মুক্ত হলো ১৭ দিনের শিশু

করোনা আক্রান্ত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া এক কন্যাশিশু নিজেও আক্রান্ত হয়েছিল ওই ভাইরাসে। তবে জন্মের ১৭ দিনের মাথায় ওই শিশুকে ওষুধ প্রয়োগ ছাড়াই সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বাড়িতে পাঠানোর কথা জানিয়েছে চীনা চিকিৎসকেরা। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সর্বকনিষ্ঠ রোগী হিসেবে নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে শিশুটি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে বাড়িতে পাঠানো হয়

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। এতে আক্রান্ত দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২৫৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৭৭ হাজার। অচল হয়ে পড়েছে চীনা অর্থনীতি। ২৪টিরও বেশি দেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মারা গেছে প্রায় ২৬২৮ জন। আর আক্রান্ত হয়েছে ৭৯ হাজার সাতশোরও বেশি মানুষ। একপর্যায়ে এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে উহান শহরে জন্ম নেয় জিয়াও জিয়াও নামের এক মেয়ে শিশু। করোনা আক্রান্ত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়ার দিনেই তাকে পাঠানো হয় উহানের শিশু হাসপাতালে। চীনের পিপল’স ডেইলি জানিয়েছে, সেদিনই তাকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

উহানের শিশু হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের পরিচালক ডা. জেং লিংকক জানান, জিয়াও জিয়াও এর শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ এবং ফুসফুসে সামান্য ক্ষত দেখা যায়। তবে তার লক্ষণ নিশ্চিত না হওয়ায় চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভিকে ডা. জেং বলেন, ‘তার শ্বাস নেওয়ায় কোনও নিশ্চিত জটিলতা ছিলো না, জ্বর বা কাশিও ছিলো না সেকারণে আমরা কেবল তাকে ফুসফুসে সংক্রমণের চিকিৎসা দেই’।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি পরপর তিনটি পরীক্ষায় তার শরীরে আর করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি না পাওয়ায় তাকে ওইদিন বিকেলেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ডা. জেং লিংকক জানান শিশুটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এবং ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘এমনকি হাসপাতালে থাকা অবস্থায় তার শরীরে খানিকটা বৃদ্ধিও ঘটেছে’।

এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি চীনের উহান শহরে জন্ম নেওয়ার ৩০ ঘণ্টার মাথায় অপর এক শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাসের ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। সন্তান জন্মের পূর্বে মায়ের শরীরে এই ভাইরাস ধরা পড়েছিল। ভাইরাসটি কীভাবে শিশুর কাছে ছড়িয়েছে সে সম্পর্কে তখন নিশ্চিত হতে পারেননি  চিকিৎসকরা। চীনা ডাক্তারদের আশঙ্কা ছিলো যে মায়ের গর্ভ থেকেই সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাস।