হাসপাতালে হামলায় সিরীয় সরকারের দায়ী থাকার আশঙ্কা প্রবল: জাতিসংঘ

জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ এক তদন্ত প্রতিবেদনের সারাংশে বলা হয়েছে, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর প্রাণঘাতী হামলায় সিরীয় সরকার ও তাদের মিত্রদের জড়িত থাকার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। ওই সারাংশ হাতে পেয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এতে বলা হয়েছে, তদন্ত দলের খতিয়ে দেখা সাতটি হামলার মধ্যে তিনটির নেপথ্যেই প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের বাহিনী কিংবা তার মিত্ররা ভূমিকা রেখেছিল।noname

১৮৫ পাতার একটি গোপনীয় অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন থেকে সারাংশটি তৈরি করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে এই সারাংশটি উপস্থাপন করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে সাতটি বিমান হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখা হয়েছে।

জাতিসংঘ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরীয় সরকার বা তার মিত্ররা একটি হামলা চালিয়েছে বলে মনে করার বিশ্বাসযোগ্য কারণ রয়েছে। আবার অন্য একটি হামলা সরকারি বাহিনী একাই চালিয়েছে বলে জোরালো সন্দেহ রয়েছে। জাতিসংঘ সদর দফতর থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক জেমস বায়েস বলেছেন, প্রতিবেদনে সিরীয় সরকারের মিত্র উল্লেখ থাকলেও সেটি বিমান সহায়তা দেওয়া রাশিয়া বলে ধরে নেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সিরিয়ার আলেপ্পোতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে একটি প্রাণঘাতী হামলা হয়, যা সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কিংবা হায়েত আত তাহিরির আল শাম জোট চালিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বেসামরিক ও মানবিক স্থাপনার ওপর সহিংসতার প্রভাব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো ও তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দেয়। একাধিক প্রতিবেদন অনুযায়ী পক্ষগুলো তা এটা করতে ব্যর্থ হয়েছে’। মাঠ পর্যায়ে সীমিত সংখ্যক কর্মকর্তার উপস্থিতির কারণে বহু ঘটনা তদন্ত করে দেখা যায়নি বলে জানান জাতিসংঘ প্রধান।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দশটি সদস্য দেশ সিরিয়ার মেডিক্যাল স্থাপনায় হামলার তদন্ত শুরু করতে গুতেরেসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানায়। জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, পেরু, পোল্যান্ড ও ডোমিনিকান রিপাবলিকের অনুরোধে সেপ্টেম্বর মাসে গঠিত হয় তদন্ত দল। ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তারা কাজ শুরু করে। ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা থাকলেও তা এই বছরের ৯ মার্চ পর্যন্ত বিলম্বিত হয়। পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিবেদনটির একটি সারাংশ উপস্থাপনের দাবি জানালে সর্বশেষ এই সারাংশ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।