গায়ের জামা দিয়ে ‘মাস্ক’ বানান তারা!

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। তবে সেখানে বন্দিদের জন্য কোনও সুরক্ষা সরঞ্জাম নেই। মাস্ক না পেয়ে টি-শার্ট ছিড়ে নাক-মুখ বাঁধছেন অনেকে।12

সান ডিয়াগোর ওটে মেসা ডিটেনশন সেন্টারে অভিবাসনপ্রত্যাশী এলসিকে (ছদ্মনাম) মাস্ক দিতে এসেছেন এক গার্ড। তবে এটি পেতে হলে একটা ফর্মে স্বাক্ষর করতে হবে। সেই ফর্মে লেখা আছে, ‘করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।’

এলসি ও ডিটেনশন সেন্টারে থাকা অন্য কয়েকজনের এমন অভিযোগ অবশ্য কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, শুধু মাস্ক পরলেই করোনাভাইরাস থেকে বাঁচা যাবে না। এই সত্য মনে করিয়ে দিতেই ফর্মটিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে।

এদিকে ওটে মেসা ডিটেনশন সেন্টারের বন্দিদের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। মাত্র এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা এক থেকে বেড়ে ১২-তে দাঁড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে অভিবাসনপ্রত্যাশী বন্দিদের মনে। ফর্ম পূরণ না করলে মাস্ক দেওয়া হয় না। করোনার হাত থেকে বাঁচতে তাই টি-শার্ট ছিড়ে নাক-মুখ ঢাকছেন অনেকে।

করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ এখন যুক্তরাষ্ট্র। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। মৃত্যুর মিছিল থামাতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বড় অপরাধ না করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার প্রশাসন। সে অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১৬০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও ৩৩ হাজার ৮০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে।

বেশিরভাগ ডিটেনশন সেন্টারেই মাস্ক, হাত ধোয়ার সুব্যবস্থা বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপায় নেই। লুজিয়ানায় ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে। ছয় হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক রাখা হয়েছে সেখানে। সেখানকার এক ডিটেনশন সেন্টারের পরিস্থিতি বোঝাতে ক্যামেরুন থেকে আসা একজন বলেছেন, ‘এখানে আমাদের মধ্যে কোনও সামাজিক দূরত্ব নেই। স্রেফ ঈশ্বরের কৃপায় বেঁচে আছি আমরা।’

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আইনি সংস্থা আরএআইসিইএস অ্যাকশন গ্রুপ এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে হাউসটনের মন্টগোমারি প্রসেসিং সেন্টারের এক নারী অভিবাসনপ্রত্যাশী বলেছেন, ‘অফিসারদের মাস্ক আছে, আমাদের নেই।’ আরেক নারী জানিয়েছেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা এবং সন্তানের জীবন নিয়ে তিনি চিন্তিত। সূত্র: ডয়চে ভেলে।