ইকুয়েডরের সবচেয়ে বড় শহরে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে হাজার হাজার

সরকারি হিসাব অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইকুয়েডরে মারা গেছে ৪০৩ জন। তবে নতুন এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, কেবল একটি মাত্র প্রদেশেই কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকার বলছে, এপ্রিলের প্রথম দুই সপ্তাহে গুয়াইয়াস প্রদেশে ছয় হাজার সাতশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রদেশেই দেশটির সবচেয়ে শহর গুয়াইয়াকুইল শহর অবস্থিত। দেশটিতে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে এখানেই। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির হাতে আসা ফুটেজে দেখা গেছে, শহরটির বাসিন্দাদের মৃতদেহ অন্তত পাঁচদিন পর্যন্ত ঘরে রাখতে বাধ্য করা হচ্ছে।noname

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ইকুয়েডরে সর্বপ্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এরইমধ্যে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইকুয়েডর সরকারের হিসাব অনুযায়ী, উপকূলীয় প্রদেশ গুয়াইয়াসে আক্রান্তের সংখ্যা দেশের মোট আক্রান্তের ৭০ ভাগেরও বেশি। আর প্রদেশটির রাজধানী গুয়াইয়াকুইলে সংক্রমণের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাজফিডের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জনশূন্য রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে পড়ে আছে মানুষের মরদেহ। কিছু মানুষ রাস্তা দিয়ে হেটে গেলেও কেউ এগিয়ে যাচ্ছে না মৃতদেহের দিকে। দেশটির কর্তৃপক্ষ পড়ে থাকা সেসব মরদেহ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করছেন।

গুয়াইয়াকুইলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে মৃতদেহগুলো মুড়ে নিজ নিজ বাড়িতেই রেখে দিয়ে যাচ্ছে আবার কখনো তা রাস্তাতেই ফেলে রাখা হচ্ছে।

গুয়াইয়াকুইলের কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে হাজার হাজার কার্ডবোর্ডের কফিন বিতরণ শুরু করে। নিজ বাড়ি থেকে মরদেহ সরানো অপরিহার্য হলে তাদের সহযোগিতার জন্য চালু করা হয়েছে একটি সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন। এই সমস্যা মোকাবিলায় গঠিত পুলিশ ইউনিটের প্রধান জর্জ ওয়াটেড গত সপ্তাহে জানানা, বিভিন্ন বাড়িতে পড়ে থাকা ৭৭১টি মৃতদেহ সরিয়েছেন তারা।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী মার্চের শুরু থেকে গুয়াইয়াস প্রদেশে সব কারণ মিলিয়ে মোট ১৪ হাজার ৫৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রদেশটিতে গতে প্রতি মাসে সাধারণত দুই হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইকুয়েডরে মোট আট হাজার ২২৫জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষার সংখ্যা সীমিত হওয়ায় বহু আক্রান্তকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।