উপকূলের আরও কাছে আম্পান, উড়িষ্যায় ভারী বৃষ্টিপাত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুপার সাইক্লোন আম্পান বাংলাদেশ ও ভারত উপকূলের আরও কাছে সরে এসেছে। ক্যাটাগরি পাঁচ মাত্রার হারিকেনের শক্তি সম্পন্ন এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে ভারতের উড়িষ্যায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা উপকূল থেকে প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে  ভারত। আবহাওয়াবিদদের বরাতে আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, প্রবল এই ঝড়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে পশ্চিমবঙ্গের সাতটি জেলা।noname

বঙ্গোপসাগরে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পান আগামী বুধবার বিকেল নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী যেকোনও এলাকা দিয়ে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। মৌসুমী বায়ু শুরুর আগে বাংলাদেশ-ভারত উপকূলে এই শতাব্দীতে প্রথমবার আঘাত হানতে যাচ্ছে কোনও সুপার সাইক্লোন। আর এবারের ঝড়টি ১৯৯৯ সালে উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানা সুপার সাইক্লোনের মতো ভয়ঙ্কর চেহারা নেবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই ঝড়ে উড়িষ্যায় প্রায় নয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

ভারতের ভুবনেশ্বর আবহাওয়া কেন্দ্রের পরিচালক এইচ আর বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিলো। এটি উড়িষ্যার পারাদ্বীপ থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণে, পশ্চিমবঙ্গের দিঘা উপকূল থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে আটশো কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিলো।

ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আম্পানের প্রভাবে বুধবার সকাল থেকেই প্রবল ঝোড়ো হাওয়া শুরু হবে। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতিবেগ সাধারণত ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে ১৭৫ কিমি থাকবে। তবে সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্তও হতে পারে দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। তবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি হতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২০ কিমি।

ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদসহ গঙ্গার তীরবর্তী জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। দুই ২৪ পরগনায় ৪ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় ৩ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদরা। জলোচ্ছ্বাসের জেরে নিচু এলাকা জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।