করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ব্রাজিল

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শুক্রবার (২২ মে) দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে ২০ হাজার ৮০৩ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে। এতে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার ৮৯০ জনে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, মহামারি মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর ওপর চাপ জোরালো হওয়ার ধারাবাহিকতায় রাশিয়াকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসলো ব্রাজিল।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা শনাক্তের দেশ হয়েও লকডাউন ঘোষণা করেনি ব্রাজিলের কর্তৃপক্ষ

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে সর্বোচ্চ করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ১৬ লাখের বেশি মানুষের শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার মানুষের। শুক্রবার তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া রাশিয়াতে মোট শনাক্ত হয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার ৪৪৮ জন। শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫২ লাখ ১০ হাজার ৬৫ জনে।

সম্প্রতি ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। গত ১৯ মে (মঙ্গলবার) দেশটি যুক্তরাজ্য ও স্পেনকে ছাড়িয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের দেশে পরিণত হয়। তার মাত্র তিন দিন আগে ১৬ মে চতুর্থ সর্বোচ্চ শনাক্তের দেশে পরিণত হয়েছিল দেশটি। 

গত ২১ মে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে, ব্যাপক আকারে পরীক্ষার অভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়ে বেশি হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাজিলে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়ে অন্তত ১৫ গুণ বেশি হতে পারে। তাদের এই আশঙ্কা সত্যি হলে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অন্তত তিনগুণ বেশি হবে।

গত সপ্তাহে ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর সাও পাওলোর মেয়র ব্রুনো কোভাস সতর্ক করে দিয়ে বলেন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা মেনে চলা না হলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে শহরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। শহরটির এক কোটি ২০ লাখ বাসিন্দাকে বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দিয়ে পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। তবে এখনও ভাইরাসটির হুমকি উড়িয়ে দিচ্ছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো। তার দাবি লকডাউন ঘোষণা করা হলে তা ব্রাজিলের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতাদর্শিক মিত্র ব্রাজিলের ডানপন্থী নেতা জইর বলসোনারো শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের হুমকিকে ‘ছোটখাটো ফ্লু’ আখ্যা দিয়ে আসছেন। ভাইরাসটির বিস্তার রোধে দেশটির কোনও কোনও প্রাদেশিক সরকার লকডাউন ঘোষণা করলেও এর কারণে বেকারত্ব বাড়ছে বলে সেসব সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করছেন বলসোনারো। করোনা চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যাপক আকারে ব্যবহারের তাগাদা দিচ্ছেন তিনি। তবে তার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এক মাসেরও কম সময় দায়িত্বে থেকে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী নেলসন টেইক।