বিতর্কিত চীনা আইনের পক্ষে অবস্থান নিলেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী

চীনের প্রস্তাবিত বিতর্কিত আইনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলে অন্য কোনও দেশের হস্তক্ষেপের কোনও সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। বিতর্কিত ওই আইনটি হংকংয়ের বাসিন্দাদের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না বলেও মনে করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম

সম্প্রতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। এই আইনে দেশদ্রোহিতা, বিচ্ছিন্নতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর অধীনে হংকংয়ের আইন প্রণেতাদের বাদ দিয়েই এসব অপরাধে অভিযুক্তদের সাজা দেওয়ার সুযোগ পাবে চীনা কর্তৃপক্ষ। এতে স্বায়ত্তশাসন খর্বের আশঙ্কায় বিক্ষোভ শুরু করেছে হংকংয়ের বাসিন্দারা। গত বছর হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে ওই আইন প্রণয়ণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এর প্রতিবাদে গত সপ্তাহেই অঞ্চলটিতে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে।

চীনের আইন প্রণয়নের উদ্যোগের পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এনিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেছেন, আইন মেনে চলা সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের রক্ষার স্বার্থেই নতুন আইনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আইনটি সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে চীনের খসড়া সিদ্ধান্তের যে সারমর্ম জানা যাচ্ছে তাতেও আশ্বস্ত হওয়া যেতে পারে। গত কয়েক দিনে হংকংয়ের বাসিন্দাদের কাছ থেকেও আইনটি নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়ার দাবি করেন তিনি।

এদিকে হংকংয়ের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনকে কেন্দ্র করে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত ওই আইন কার্যকর হলে অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে হংকংয়ের মর্যাদা হুমকির মুখে পড়বে।

সোমবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেন, এই আইন ঘিরে বিদেশি রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কোনও সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কোনও দেশই জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ত্রুটি সহ্য করবে না। আর চীনের অংশ হিসেবে হংকংও এর বাইরে নয় বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১৫০ বছর ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই হংকং চীনের কাছে ফেরত দেয় যুক্তরাজ্য। তখন থেকে বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হংকংকে ২০৪৭ সাল অবধি স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে চীন। এই সময়ে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র নীতি বাদে অন্য সব বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতে পারবে অঞ্চলটি। তবে গত বছর অঞ্চলটিতে ব্যাপক বিক্ষোভের নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে চীন।