মোদি কেন লুকিয়ে: তোপ রাহুল গান্ধীর

কাশ্মিরের লাদাখে চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে অন্তত ২০ ভারতীয় সেনা নিহতের ঘটনায় ভারতজুড়ে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী? এ ঘটনায় মোদির নীরবতার সমালোচনা করেছেন তিনি।noname

১৭ জুন বুধবার সকালে টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এ নিয়ে কথা বলেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? কেন তিনি লুকিয়ে আছেন? যথেষ্ট হয়েছে! কী ঘটেছে (ভারতীয় সেনাদের প্রাণহানি) তা আমাদের জানতে হবে। আমাদের জওয়ানদের হত্যা করার স্পর্ধা চীনের হয় কী করে? কোন সাহসে তারা আমাদের জমি নিয়ে নেয়?’

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই দাবি করেছে, সোমবার রাতের ওই ঘটনায় চীনেরও অন্তত ৪৩ সেনা নিহত বা মারাত্মক আহত হয়েছে। তবে চীনা কর্তৃপক্ষ কোনও হতাহতের কথা স্বীকার করেনি।

গত মাসের শুরুর দিক থেকে প্যানগং (পূর্ব লাদাখ) এবং নাকু লা (সিকিমের) এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার খবর আসতে থাকে। সে থেকেই দুই পক্ষের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা চলছে। তখন থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর প্রচুর সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়। তবে গত সপ্তাহে উভয় দেশের তরফ থেকে উত্তেজনা নিরসনে ইতিবাচক অগ্রগতির কথা জানানো হয়। এরমধ্যে সোমবার রাতে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গত ৪৫ বছরে প্রথমবারের মতো প্রাণঘাতী সংঘাতের ঘটনা ঘটে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, গালওয়ান উপত্যকার নিয়ন্ত্রণরেখার প্রতি সম্মান দেখাতে গত সপ্তাহে সম্মত হওয়া একটি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে চীন। ভারতীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনা কর্তৃপক্ষ একপাক্ষিকভাবে ওই অঞ্চলের স্থিতাবস্থা ভঙ্গের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।

চীনা কর্তৃপক্ষ কোনও হতাহতের কথা নিশ্চিত না করলেও ওই ঘটনার জন্য ভারতীয় সেনাসদস্যদের দায়ী করেছে। বেইজিংয়ের অভিযোগ, ভারতীয় সেনারা তাদের সীমানায় ঢুকে পড়ে। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, সোমবার দুইবার ভারতীয় সেনারা তাদের সীমানায় প্রবেশ করে উসকানি দেয় এবং চীনা সেনাদের ওপর হামলা চালায়। আর এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক শারীরিক সংঘাত শুরু হয়। ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত অতিক্রম করবেন না, সমস্যায় উসকানি দেবেন না, একপাক্ষিক পদক্ষেপ নিয়ে সীমান্ত পরিস্থিতি জটিল করে তুলবেন না।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-এর খবরে বলা হয়েছে, রাতের অন্ধকারে আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পাথর ও রড নিয়ে হামলে পড়ে চীনা বাহিনী। কাঁটাতার জড়ানো ব্যাটন দিয়েও ভারতীয় সেনাদের মারধর করে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। আর এতেই অন্তত ২০ জওয়ানকে হারায় ভারতীয় বাহিনী। তবে ভারতের সেনা সূত্রের দাবি, স্রেফ খণ্ডযুদ্ধ নয়, প্রবল ঠাণ্ডাতেও মৃত্যু হয়েছে অনেকের।