ভারতীয় ভূখণ্ডের কতটা ভেতরে ঢুকেছে চীন?

কাশ্মিরের লাদাখ সীমান্তে চীনা বাহিনীর হাতে ২০ ভারতীয় সেনা নিহতের পর নতুন করে একটা প্রশ্ন সামনে আসছে। প্রশ্ন উঠছে, ভারতীয় ভূখণ্ডের ঠিক কতটা ভেতরে ঢুকেছে চীন? এ প্রশ্নের সঠিক কোনও উত্তর না মিললেও উপগ্রহ চিত্রে ফুটে উঠেছে সীমান্তের প্রকৃত পরিস্থিতি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত যে উপগ্রহ চিত্র হাতে এসেছে তার দিকে তাকালেই চীনা আগ্রাসন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে গত ৩৩ দিনে পরিকল্পিতভাবে নিজেদের অবস্থান জোরদার করেছে বেইজিং।

গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোল পয়েন্ট ১৪-এর কাছে ভারতীয় বাহিনীর ওপর চড়াও হয় চীনা সেনারা।  এতে এক কর্নেলসহ অন্তত ২০ ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়। এরপরই সীমান্তের প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে উপগ্রহ চিত্রের তালাশে নামে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

জি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গত মে মাস থেকেই দিনের পর দিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ঘাঁটি গেড়েছে বেইজিং। উপগ্রহ চিত্রগুলোকে একসঙ্গে রাখলেই এটা স্পষ্ট বোঝা যায়।

২২ মে উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, গালওয়ানের কাছাকাছি একটি ইগলুর মতো ক্যাম্প ও পাশাপাশি ২০ জন সৈনিক। সীমান্তে চীন-ভারত সংঘর্ষ হয় ১৫ জুন। কিন্তু ১৬ জুন পর্যন্ত ওই ঘাঁটির আশেপাশে কোনও নির্মাণকাজের ছবি ধরা পড়েনি উপগ্রহ চিত্রে।

২২ জুনের উপগ্রহ চিত্রে গোলাপি ত্রিপলে আচ্ছাদিত একটা অঞ্চল এবং গালওয়ান থেকে মাত্র ১৫০ মিটার দূরে ৫০ জন সৈনিককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অর্থাৎ ১৬ থেকে ২২ জুন এই ছয় দিনের মধ্যেই পাকাপাকি ঘাঁটি তৈরি করেছে চীনের লাল ফৌজ।

এরপর ২৫ জুনের ছবি, গোলাপি ত্রিপলগুলোর জায়গায় কালো ত্রিপল। জায়গাটি পরিষ্কার। আশেপাশে পাথর পড়ে নেই। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে ভারতীয় ভূখণ্ডের দখল ছাড়েনি বেইজিং। উল্টে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে তারা।

কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল জানিয়েছেন, লাদাখের ওয়াই জংশনে অর্থাৎ ভারতের ১৮ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে বেইজিং। ভারতীয় জওয়ানদের পেট্রোল পয়েন্টে টহল দিতেও বাধা দিচ্ছে চীনা সেনারা।

উপগ্রহ চিত্রে যে ছবি ফুটে উঠছে তা থেকে বলা যায়, ভারতের দৌলতবেগ ওলদি বিমান ঘাঁটির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে চীনা বাহিনী।

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, লাদাখে চীনকে অত্যন্ত কড়াভাবেই মোকাবিলা করেছে ভারত। তিনি বলেন, ওখানে যারা আমাদের চ্যালেঞ্জ করেছিল তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ভারত জানে কীভাবে কারও ভালো বন্ধু হতে হয়। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করে তখন তার জবাব কীভাবে দিতে হয় তা-ও দিল্লির জানা আছে।’ সূত্র: জি নিউজ।