এমপি পাপুলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কুয়েতি কর্মকর্তা বরখাস্ত

মানবপাচারের দায়ে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশের পার্লামেন্ট সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে কুয়েত। মঙ্গলবার বরখাস্ত হয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস আল-সালেহ এক ডিক্রি জারির মাধ্যমে তাকে বরখাস্ত করেছেন বলে খবর দিয়েছে কুয়েতের সংবাদমাধ্যম আরব টাইমস।বাঁয়ে কুয়েতি কর্মকর্তা মাজেন আল জাররাহ আর ডানে বাংলাদেশি এমপি পাপুল

অর্থ, মানবপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে গত ৬ জুন বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে আটক করে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতারের পর তার নাম সামনে আসে। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ২৪ জুন এমপি পাপুলকে ২১ দিনের জন্য কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

পাপুলকে গ্রেফতারের পর তার সঙ্গে কুয়েতের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশের প্রমাণ হাতে পায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কর্মকর্তারা জানতে পারেন, এমপি পাপুলের জন্য ২৩ হাজারের বেশি কর্মীর এন্ট্রি ভিসার অনুমোদনে সহায়তা দিয়েছেন কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ।

আর এসব তথ্য সামনে আসার পরই কুয়েতের ওই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুন মানবপাচার, ভিসা জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে এমপি পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরে উঠে আসে কীভাবে বাংলাদেশের ওই সংসদ সদস্য মানুষকে প্রতারিত করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এবং এই কাজে তাকে কুয়েতের প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তারাও সহায়তা করেছে ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য সুযোগের বিনিময়ে। এখন পর্যন্ত তদন্তে বের হয়ে এসেছে পাপুল প্রতি বছর বিভিন্ন ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ৬০ কোটি টাকা নেট লাভ করতেন। 

এছাড়া পাপুল এবং তার কোম্পানির ব্যাংকে থাকা প্রায় ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) ফ্রিজ করার জন্য ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর। এদিকে, বিদেশের মাটিতে একজন এমপি আটকের ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।