বিস্ফোরণের ঘটনায় বহিরাগত হস্তক্ষেপ খতিয়ে দেখা হচ্ছে: লেবাননের প্রেসিডেন্ট

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন বলেছেন, বৈরুত বন্দরের গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনটি সম্ভাব্য কারণকে মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। এটি অবহেলাজনিত কারণে হয়েছে কিনা, অথবা এর পেছনে বহিরাগত হস্তক্ষেপ আছে কিনা নাকি এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা; তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার (৭ আগস্ট) লেবাননের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

মাইকেল আউন

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছিল। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড় গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে, এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি ও স্থাপনা উড়ে যেতে দেখা যায়। লেবাননের সরকারি হিসেবে, বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৫৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫ হাজার মানুষ। নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার কারণ নির্ণয়ে তদন্ত কমিটিকে চারদিনের সময় বেঁধে দিয়েছে দেশটির সরকার।

শুক্রবার লেবাননের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতিতে আউন বলেন, ‘ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। রকেট বা বোমা কিংবা অন্য কোনও ভাবে বাইরে থেকে হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’

আউন আরও জানান, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনটি পর্যায়ে তদন্ত চলছে। ‘প্রথমত, কিভাবে ওই বিস্ফোরকগুলো গুদামে ঢুকেছে ও মজুত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, অবহেলা বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে ওই বিস্ফোরণ হয়েছে কিনা। এবং তৃতীয়ত, বাইরের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা।’

বিস্ফোরণের পর থেকেই ক্ষোভে ফুসছে মানুষ। সরকারিভাবে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, গুদামে মজুত ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরিত হয়ে মারাত্মক ওই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ সাল থেকে এতগুলো রাসায়নিক অনিরাপদে সেখানে মজুত ছিল।

বৃহস্পতিবার লেবাননের রাজধানী শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। তারা বলছে, সরকারের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা আর অবহেলার কারণেই এমন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। 

দেশটির পার্লামেন্ট ভবনের কাছে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে নিরাপত্তাবাহিনী।