তাইওয়ানে মার্কিন কর্মকর্তার সফরের মধ্যে চীনের মহড়া

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তার তাইওয়ান সফরের মধ্যেই স্বায়ত্তশাসিত এ দ্বীপটির কাছে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। নিজেদের ‘সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা’র স্বার্থে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ মহড়া শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

চীন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও জে দংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাথমিকভাবে ওই সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে পড়লেও উভয় দেশই নিজেদের চীনের দাবিদার হিসেবে উত্থাপন শুরু করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেইজিংভিত্তিক চীন সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক না থাকলেও তাইপের সুরক্ষায় সহায়তা দিতে তাদের আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। তাছাড়া বেইজিং এর সঙ্গে ওয়াশিংটনের উত্তেজনা চলমান আছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তিনদিনের সফরে তাইওয়ানে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি কেইথ ক্রাচ। শুক্রবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা। তিনি গত কয়েক দশকের মধ্যে তাইওয়ান সফরে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

এরমধ্যেই শুক্রবার থেকে মহড়া শুরুর কথা জানিয়েছে চীন।  

এদিন চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রেন গুয়োকিয়াং সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাইওয়ানকে ব্যবহার করে চীনকে নিয়ন্ত্রণ’ আর ‘বিদেশিদের উপর ভর করে নিজেদের গড়ে তোলা’টা বেইজিং-এর‘দিবাস্বপ্ন’।

রেন হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যারা আগুন নিয়ে খেলবে, তারা জ্বলে যাবে।’

এ মুখপাত্র বলেন, ‘মূল ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষায় চীন যে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে তা বৈধ ও প্রয়োজনীয়’।