বিক্ষোভের সঙ্গে জোরালো হচ্ছে থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবি

থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের শাসনকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী ব্যাংককে বিক্ষোভ করেছে দেশটির হাজার হাজার নাগরিক। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা’র নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের পাশাপাশি রাজার ক্ষমতা কমিয়ে রাজতন্ত্র সংশোধনের দাবি করছে। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীদের একটি মিছিল পুলিশ আটকে দিলেও তাদের দাবি রাজকীয় পুলিশের সদর দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে নিজেদের বিজয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীদের নেতা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।গত দুই দিন ব্যাংককে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার থাই নাগরিক

গত ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে শুরু হওয়া বিক্ষোভ গত দুই মাসে নতুন গতি পেয়েছে। কঠোর কারাদণ্ডের ভয়ে রাজতন্ত্র নিয়ে কথা বলতে ভয় পাওয়া দেশটিতে রাজতন্ত্র সংস্কার ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভের মূল নেতৃত্বে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার থাই রাজপ্রাসাদের অদূরে একটি পার্ক প্রতিকীভাবে দখল করে নেয় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।

রবিবার সূর্য ওঠার পরই রয়্যাল ফিল্ড নামে পরিচিত ওই পার্কে একটি ফলক স্থাপন করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ওই ফলকে লেখা রয়েছে, ‘এই স্থানে মানুষ তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে: আর তা হলো এই দেশ জনগণের এবং আমাদের প্রতারিত করা রাজতন্ত্রের সম্পদ নয়।’ পরে বিক্ষোভকারীরা একটি মিছিল বের করে।

তবে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর সেই মিছিলটি আটকে দেয় দেশটির নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যরা। তবে বিক্ষোভকারীদের নেতা জানান, তাদের দাবি দাওয়া সদর দফতরে পাঠিয়ে দিতে রাজি হয়েছে দেশটির রয়্যাল গার্ড পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের নেতা পারিত চিওয়ারাক সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, ‘গত দুই দিনে আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো এটা দেখিয়ে দেওয়া যে, আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরাও রাজাদের কাছে চিঠি পাঠাতে পারে।’

থাই রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন বর্তমানে দেশে নেই আর রাজপ্রাসাদের তরফেও এই বিক্ষোভ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। পুলিশও কোনও বক্তব্য জানায়নি।

তবে রবিবার বিক্ষোভকারীরা আগামী বৃহস্পতিবার আবারও রাজপথে বিক্ষোভে নামার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া আগামী ১৪ অক্টোবর ১৯৭৩ সালের শিক্ষার্থী বিক্ষোভের স্মরণে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রবিবার বিক্ষোভকারীরা রাজপ্রাসাদের কাছের পার্কে ফলক স্থাপন করলেও হস্তক্ষেপ করেনি পুলিশ। সরকারের মুখপাত্র অনুচা বুরাপাচাইসরি বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতা ব্যবহার করবে না পুলিশ। আর কোনও অবৈধ বক্তব্য নিরুপণ ও বিচারের এখতিয়ার পুলিশের।