আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার বিদ্যমান সংঘাত নিরসনে দুই দেশের প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস। দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে পৃথক ফোনালাপে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।13

স্টিফেন ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আমাকে জানিয়েছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে এরইমধ্যে তিনি আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিগগিরই তিনি আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন।

ডুজারিক জানান, অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করে নিঃশর্ত আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

এদিকে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার যুদ্ধাবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আজ ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রুদ্ধদ্বার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে জার্মানি ও ফ্রান্স এই বৈঠকের অনুরোধ জানালেও এতে সমর্থন রয়েছে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সদস্য দেশ বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য ও এস্তোনিয়ার।

নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে গত শনিবার থেকে নতুন করে শুরু হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পুরনো লড়াই। তিন দিনের এই লড়াইয়ে ইতোমধ্যে অন্তত ৬৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ অধিবেশন চলাকালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দুই দেশের এই লড়াই ওই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার যুদ্ধে রাশিয়া ও তুরস্কের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কারণ আর্মেনিয়ার সঙ্গে সামরিক জোট রয়েছে রাশিয়ার। আর আজারবাইজানকে সমর্থন করছে তুরস্ক।

ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইরান ও ইউরোপীয় শক্তিগুলো লড়াই থামিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইস্তাম্বুলে দেওয়া এক ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, আর্মেনিয়াকে অবিলম্বে আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যেতে হবে।

উল্লেখ্য, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে অবস্থিত হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। পরে ২০১৬ এবং এই বছরের শুরুতেও সংঘাতে জড়ায় দুই পক্ষ।