কঙ্গোর কারাগারে হামলা, পালিয়েছে প্রায় নয়শ’ বন্দি

আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গোর (ডিআরসি) পূর্বাঞ্চলীয় বেনি শহরের একটি কারাগারে সংঘবদ্ধ সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ভোরে সশস্ত্র ব্যক্তিদের এই হামলার পর পালিয়েছে প্রায় নয়শ’ বন্দি। হামলার জন্য ওই অঞ্চলে সক্রিয় একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন সেখানকার মেয়র মোদেস্তে বাকওয়ানামাহা।  তবে এখনও কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

উগান্ডার সশস্ত্র গোষ্ঠী এডিএফ (অ্যালাইড ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স) ১৯৯০’র দশক থেকে ডিআরসি’র পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। জাতিসংঘের হিসেবে গোষ্ঠীটির হাতে ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ওই অঞ্চলের প্রায় এক হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তাদের দমনে একাধিকবার সেনা অভিযান চললেও তা কার্যত সফলতা পায়নি।

মঙ্গলবারের হামলা প্রসঙ্গে স্থানীয় মেয়র মোদেস্তে বাকওয়ানামাহা জানান, কানবায়ি কেন্দ্রীয় কারাগারের এক হাজার বন্দি থাকলেও হামলার পর কারাগার ও এটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পার্শ্ববর্তী একটি সেনা ক্যাম্পে মাত্র একশ’ বন্দিকে পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, হামলাকারীরা বিপুল সংখ্যায় এসে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কারাগারের দরজা ইলেক্ট্রনিক সরঞ্জাম দিয়ে ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়। মেয়র বলেন, আমাদের বিশ্বাস এই হামলা এডিএফ চালিয়েছে।

এক টুইট বার্তায় স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটার দিকে হামলা শুরু হলে তা প্রতিহত করতে পাল্টা অভিযান চালানো হলে দুই বন্দি নিহত হয়। পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, অনেক বন্দি পালিয়ে গেলেও বহু সংখ্যক এখনও নিখোঁজ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালেও একবার এই কারাগারটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। সেবারও প্রায় এক হাজার বন্দি পালিয়ে যায়।

কানবায়ি কেন্দ্রীয় কারাগারে মূলত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের আটক রাখা হয়। এদের মধ্যে এডিএফ যোদ্ধারা ছাড়াও স্থানীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছে। মেয়র বাকওয়ানামাহা জানান, গুজব রয়েছে যে হামলার কয়েক দিন আগে থেকেই বন্দি থাকা এডিএফ যোদ্ধারা পালানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখে।

এডিএফ যোদ্ধারা ছয় বছর আগে আশপাশের গ্রামগুলোতে তলোয়ার ও বন্দুক নিয়ে হামলা শুরু করে। এছাড়া গত কয়েক বছরে তারা শত শত মানুষকে অপহরণ করেছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গত দেড় বছরেই গোষ্ঠীটি প্রায় পাঁচশ’রও বেশি মানুষকে অপহরণ করেছে।

এডিএফ’র ওপর দায় চাপানো বেশ কিছু হামলার ঘটনায় পরে দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যদিও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা গোষ্ঠী দুটির মধ্যে সরাসরি কোনও সংযোগ পায়নি। প্রায় এক বছর আগে এডিএফ’র বিরুদ্ধে বড় ধরনের সেনা অভিযান শুরু হয়। তার জেরে গোষ্ঠীটি নিজেদের ঘাঁটি ছেড়ে দিয়ে ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আরও বেশি ভ্রাম্যমাণ হয়ে পড়েছে আর বেসামরিক নাগরিকদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।