বাসে উঠেই বন্দুক হামলা, নিহত অন্তত ৩৪

ইথিওপিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে একটি যাত্রীবাহী বাসে উঠে গুলি করে ৩৪ জনকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। তাইগ্রে অঞ্চলে সরকারি ও তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট পার্টির (টিপিএলএফ) বাহিনীর মধ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মধ্যেই দেশটির বেনিশানজুল-গুমুজ অঞ্চলে শনিবার রাতে ওই হামলা হয়। রবিবার দেশটির জাতীয় মানবাধিকার সংগঠন ইথিওপিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন এ তথ্য জানিয়েছে।

noname

এক বিবৃতিতে ইথিওপিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন বলেছে, বেনিশানজুল-গুমুজ অঞ্চলের দেবাট প্রশাসনিক এলাকায় শনিবার রাতে কয়েকজন বন্দুকধারী একটি যাত্রীবাহী বাসে উঠেই হামলা চালায়। হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে ৩৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে ওই হামলার সঙ্গে ইথিওপিয়া ও টিপিএলএফ বাহিনীর লড়াইয়ের কোনও যোগসূত্র আছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। 

ইথিওপিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন আরও বলেছে, দেবাট প্রশাসনিক এলাকায় বাসে ওই হামলা ছাড়াও অন্য তিনটি এলাকায় একই ধরনের হামলার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সংঘাতের মুখে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া লোকদের ওপরও হামলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সরকার সাম্প্রতিক সংঘাতের ঘটনায় কোন‌ও ধরনের তথ্য দিচ্ছে না। ফলে সেখানে সংঘাতে প্রাণহানির প্রকৃত তথ্য জানা যাচ্ছে না।

২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবি আহমেদ ক্ষমতা আসার পর আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন হতে শুরু করে। প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে তারই হাত ধরে। ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় নোবেল শান্তি পুরস্কার পান আবি।

প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আবি আহমেদ প্রশংসিত হলেও নিজ দেশের স্বাধীনতাকামী অঞ্চল তাইগ্রেতে শান্তি ফেরাতে তেমন পদক্ষেপ নেননি তিনি। উল্টো ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের নামে তাইগ্রেয়ানদের কোণঠাসা করে ফেলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর প্রভাবেই তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট পার্টির (টিপিএলএফ) সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। রবিবার দুই পক্ষের সংঘাত ১২ দিনে গড়িয়েছে।

গত শনিবার রাতে তাইগ্রেয়ান বাহিনী প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার একটি বিমানবন্দরে রকেট হামলা চালিয়েছে। টিপিএলএফের নেতা দেবরেটসন গ্রেবিমাইকেল ওই হামলার দায় স্বীকার করে বলেছেন, তাইগ্রেয়ানদের ওপর হামলা চালানোর জন্য ওই বিমানবন্দর ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী ব্যবহার করে আসছিল। তবে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।