গাজায় দারিদ্র্যসীমার নিচে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

ইসরায়েল কর্তৃক অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের জীবন। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দখলদার বাহিনীর অবরোধে অঞ্চলটির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। দারিদ্র্যসীমার নিচে দিনাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছে সেখানকার ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। এমনটাই উঠে এসেছে বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের এক নতুন প্রতিবেদনে।ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর এভাবে হামলে পড়ে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। ফাইল ছবি।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি)। বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রতিবেদনটি উত্থাপন করা হয়। এতে ২০০৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে অবিলম্বে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

ইউএনসিটিএডি-এর ফিলিস্তিনি সহায়তা বিষয়ক সমন্বয়কারী মাহমুদ এলখাফিফ বলেন, অন্যায্য এই অবরোধের ফলে গাজার অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছেছে। দারিদ্রসীমার নিচে দিনাতিপাত করছে অন্তত ৫৬ শতাংশ মানুষ। অবরোধ অব্যাহত থাকলে এ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।

মাহমুদ এলখাফিফ বলেন, গাজার ২০ লাখ লাখ বাসিন্দার ওপর থেকে এই অনর্থক অবরোধ অবিলম্বে তুলে নেওয়া উচিত। তাদের অবাধে চলাফেরা এবং বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের সুযোগ দেওয়া উচিত। উপত্যকার বাইরে থাকা পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া উচিত।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলছে, গাজাবাসীর প্রাত্যহিক জীবনযাপনকে বিপর্যস্ত করে তুলতে দখলদার বাহিনী আগ্রাসী নীতির আশ্রয় নিয়েছে। তারা ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নীরবতার সুযোগ নিচ্ছে।

২০০৭ সাল থেকেই গাজা উপত্যকা অবরোধ করে রেখেছে দখলদার বাহিনী। বাইরের দুনিয়া থেকে অঞ্চলটিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে নিয়মিত সেখানে তাণ্ডব চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ধরপাকড় আর বিমান হামলা যেন সেখানে নৈমিত্তিক ঘটনা। এমন  বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সঙ্গেই বাস করতে হচ্ছে সেখানকার ২০ লাখ বাসিন্দাকে। জাতিসংঘ ও বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বসবাস দারিদ্রসীমার নিচে। এরমধ্যেই ইসরায়েলি তাণ্ডব তাদের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। সূত্র: আল জাজিরা।