ইরানের বন্দিদশা ছিল দীর্ঘ ও যন্ত্রণাদায়ক: মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যাকাডেমিক

ইরানে দুই বছর তিন মাস কারাবন্দি থাকার সময়কে দীর্ঘ ও যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা বলে বর্ণনা করেছেন ব্রিটিশ-অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকাডেমিক কাইলি মুরে-গিলবার্ট। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা তার মুক্তি নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। এছাড়া ইরানের নাগরিকদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দণ্ডিত এই অ্যাকাডেমিক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।ইরানে মুক্তি পাওয়ার পর কাইলি মুরে-গিলবার্ট

মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের লেকচারার কাইলি মুরে-গিলবার্ট অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট নিয়ে ২০১৮ সালে ইরানে যান। এক সম্মেলনে যোগ দিয়ে ফেরার পথে তেহরান বিমানবন্দরে তাকে আটক করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। গত বছর তাকে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত করে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয় ইরানের আদালত। তবে তিন ইরানি নাগরিকের মুক্তির বিনিময়ে বৃহস্পতিবার ইরানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান তিনি।

মুক্তি পাওয়ার পর অস্ট্রেলীয় সরকারের মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে কাইলি মুরে-গিলবার্ট দাবি করেন, তিনি অবিচারের শিকার হয়েছেন। তবে ‘মহৎ ইরান রাষ্ট্র এবং এর উষ্ণ হৃদয়পূর্ণ, উদার এবং সাহসী জনগণের জন্য আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং প্রশংসা ছাড়া আর কিছুই নেই,’ বলে জানান তিনি। এই অ্যাকাডেমিক বলেন, ‘যে অবিচারের শিকার আমি হয়েছি তা সত্ত্বেও আপনাদের দেশ ছেড়ে যেতে আমার অম্লমধুর অনুভূতি হচ্ছে। বন্ধু হিসেবে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ উদ্দেশে আমি ইরানে এসেছিলাম। আর যখন ছেড়ে যাচ্ছি তখন সেই আবেগ কেবল অক্ষুণ্ন রয়েছে তা-ই নয়, বরং আরও জোরালো হয়েছে।’

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করা কাইলি মুরে-গিলবার্ট-এর পরিবারের পক্ষ থেকেও তার মুক্তিতে আনন্দ প্রকাশ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘এই অসামান্য খবরে আমাদের প্রত্যেকে যে বর্ণনাতীত আনন্দ পেয়েছি তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’

ইরানের তরফে বন্দি বিনিময়ের আওতায় কাইলি মুরে-গিলবার্টকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানালেও তা স্বীকার করেননি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। তার দাবি, অস্ট্রেলিয়ায় কাউকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নেটওয়ার্ক নাইনকে তিনি বলেন, ‘তাকে আটক রাখা এবং দণ্ডিত করার অবিচারকে সবসময়ই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। আর কাইলি বাড়ি ফিরে আসায় আমি খুবই আনন্দিত।’