বিশ্বজুড়ে কবিতায় প্রতিবাদ, ফিলিস্তিনি কবির মৃত্যুদণ্ড স্থগিত

শিল্পের দেশ নেই। জাতীয়তা আর কাঁটাতারের গণ্ডি অতিক্রম করে শিল্প সম্মিলিত করে জগতকে। ক্ষমতাশালীরা তাই বরাবরই ভয় করে শিল্পকে। ভয় করে সৎ নিষ্ঠাবান শিল্পীকে। সে কারণেই কি ফিলিস্তিনি শিল্পী ও কবি আশরাফ ফায়াদের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করলো সৌদি আরবের আদালত?
স্বধর্মত্যাগ ও ধর্ম অবমাননাসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগে গত নভেম্বরে আশরাফ ফায়াদের শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় সৌদি আদালত।  তবে বৃহস্পতিবার (১৪ই জানুয়ারি, ২০১৬) ইন্টারন্যাশনাল লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল বার্লিন  ৪৪টি দেশে ১২২টি ইভেন্টে আশরাফের কবিতাপাঠের আয়োজন করে। এই কবিতাপাঠের মাধ্যমে তার শিরশ্ছেদের প্রতিবাদ জানানো হয় ও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি সৌদি আরবের প্রতি চাপ প্রয়োগ করে আশরাফের মৃত্যুদণ্ড রহিত করার আবেদন জানানো হয়। 

কবি ও শিল্পী আশরাফ ফায়াদ

এ ছাড়াও গত ডিসেম্বরে পেন আমেরিকান সেন্টার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি আশরাফের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার জন্য সৌদি সরকারের প্রতি চাপ প্রয়োগ করার অনুরোধ জানিয়ে এক চিঠি পাঠায়। যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের মিত্র হওয়ায় এই নির্দেশের ওপর খুব একটা প্রভাব পড়বে বলে আশা রাখেননি সৌদি আরবের কবি ও লেখকরাও। ফলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার একদিন আগে বিশ্বব্যাপী কবিতাপাঠের আয়োজন করেন আশরাফের সমর্থক কবি, লেখক ও শিল্পীরা। 

শনিবার ( ১৬ জানুয়ারি, ২০১৬) ৩৫ বছর বয়সী এই কবি, শিল্পী ও আর্ট কিউরেটরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা থাকলেও অবশেষে তার পক্ষের আপিল আমলে এনেছে আদালত। আগামী সপ্তাহে তার আপিল শুনানি হবে বলে জানিয়েছে বিচারকদের এক প্যানেল। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কবি আশরাফ ফায়াদ

 

আশরাফের সমর্থকরা অনেকেই দাবি করেন, অপর এক শিল্পীর সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক ও সেই ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালে প্রকাশিত তার কবিতার বই ইন্সট্রাকশন উইদিন এর লেখাগুলোতে ইসলামবিরোধী বক্তব্য রয়েছে এবং ওই কবিতাগুলোর মাধ্যমে নাস্তিকতা প্রচার করছেন আশরাফ।

এ ছাড়াও নারীদের সঙ্গে ছবি তোলা ও সেই সব ছবি মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে রাখায় সৌদি আরবের অ্যান্টি সাইবার আইনভঙ্গের অভিযোগও ওঠে আশরাফের বিরুদ্ধে। আশরাফ জানান, তিনি জেদ্দা ও ভেনিসে আর্ট একজিবিশনের কিউরেটর হিসেবে কাজ করেছেন। সেখানেই তোলা হয়েছে ওই ছবিগুলো। সূত্রঃ ওয়াশিংটন রিপোর্ট, দ্য গার্ডিয়ান

/ইউআর/বিএ/