মঙ্গলে কংক্রিট তৈরিতে মহাকাশচারীদের রক্তসহ কী কী লাগবে জানালেন বিজ্ঞানীরা

মঙ্গল বা চাঁদে আবাসস্থল গড়ে তুলতে বহুকাল ধরে কত চেষ্টায় না চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে ঘর-বাড়ি বানানো তো আর সহজ কথা না! কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন, লাল মঙ্গলে বসতি গড়ে তুলতে একটা উপায় বের করেছেন। মহাকাশচারীদের রক্ত, ঘাম, অশ্রু ও প্রসাবের সঙ্গে মঙ্গলের ধুলো মিশিয়ে কংক্রিট তৈরি করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। সম্প্রতি ম্যাটারিয়ালস টুডে বায়োর জার্নালে এমন তথ্য এসেছে।

পৃথিবী থেকে ৫ কোটি কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব মঙ্গলের। এই দূরত্বকে কমিয়ে সেখানে মানব বসতি গড়ে তুলতে দিন রাত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তার মালমশলা ইট, বালি, চুন, সুরকি ও কংক্রিট তো আর পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ। লাগবে অনেক সময়। 

এবার দীর্ঘ গবেষণার প্রচেষ্টায় পালকে যুক্ত হলো নতুন সাফল্য। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে মানুষের রক্ত এবং সিন্থেটিক রেগোলিথ ব্যবহার করে ‘অ্যাস্ট্রোক্রিট’ নামে কংক্রিটের মতো পদার্থ তৈরি করেছেন। ‘অ্যাস্ট্রোক্রিট’ মূলত মঙ্গল ও চাঁদের মাটির বৈজ্ঞানিক শব্দ।

গবেষণায় দেখা গেছে শুধুমাত্র মানুষের দেহের রক্ত, প্রসাব, ঘাম, চোখের পানি ও মঙ্গলের ধুলোর মিশ্রণে ‘অ্যাস্ট্রোক্রিট’ এর শক্তি ৩০০ গুণ বেড়ে যায়। এমনকি যে কোনও আকার দেওয়া সম্ভব।

মানুষের দেহের রক্ত, প্রসাব, ঘাম, চোখের পানি ও মঙ্গলের ধুলোর মিশ্রণে ‘অ্যাস্ট্রোক্রিট’

মঙ্গলে পানির অভাব রয়েছে। আর একটি ইট পাঠাতে সেখানে আনুমানিক খরচ হবে প্রায় ২০ লাখ মার্কিন ডলার।

প্রাচীন চীনা ও রোমান নির্মাতারা একসময় তাদের ভবন মজবুত করতে গরু এবং শুয়োরের রক্ত ব্যবহার করত। আর এই কৌশল এখানেও অনুসরণ করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে আক্ষরিক অর্থে এই পদ্ধতি কতটা কার্যকরী তার জন্য বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন বলছেন গবেষকরা।