দ্রুত বাড়ছে মহাসাগরগুলোর উষ্ণতা

বাড়ছে মহাসাগরের উষ্ণতাজলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কেবল ভূপৃষ্ঠেই নয়, মহাসাগরেও খুব দুত হারে উষ্ণতা বাড়ছে বলে সতর্ক করলেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, গত ২০ বছরে বিশ্বের মহাসাগরগুলোর উষ্ণতা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে মহাসাগরের উষ্ণতা যতটুকু বেড়েছে তার অর্ধেকই হয়েছে গত ২০ বছরে।
আর এভাবে সাগরের উষ্ণতা বেড়ে চললে তা সামুদ্রিক প্রাণির অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। ন্যাচার ক্লাইমেট চেঞ্জ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা জানান তারা।
গবেষণাটি করেন লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা। জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়মণ্ডলবিষয়ক প্রশাসনের সহযোগিতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণার জন্য মহাসাগরের বিভিন্ন গভীরতায় উষ্ণতার মাত্রা মেপে দেখা হয় এবং তা ১৮৬৫ সালের তথ্যের সঙ্গে মেলানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাগরের পানির বাতাসের চেয়েও বেশি উষ্ণতা শোষণের সক্ষমতা রয়েছে। মানুষের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট অতিরিক্ত উষ্ণতার ৯০ শতাংশেরও বেশি এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রায় ৩০ শতাংশ শুষে নিয়েছে মহাসাগরগুলো। ২০১১ সালে কেবল দক্ষিণ মহাসাগরই ১.২ বিলিয়ন টন কার্বন শুষে নিয়েছে যা ইউরাপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বার্ষিক নিঃসরণকৃত কার্বনের সমান।

বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাসাগরের অতিরিক্ত উষ্ণতার বেশিরভাগেরই অবস্থান সাগরের তলদেশে।এরমধ্যে ৩৫ শতাংশ উষ্ণতার অবস্থান ৭শ মিটার নিচে যা ২০ বছর আগে ২০ শতাংশ ছিল।

গবেষণা প্রাপ্ত ফলাফলকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করে বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, সাগরের উষ্ণতা বেড়ে গেলে ঝড়ের তীব্রতা বেড়ে যাবে এবং সামুদ্রিক প্রাণিরা তাদের স্বাভাবিক বসবাসের এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবে। অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের কারণে সাগরের অম্লতা বেড়ে যাবে উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এতে করে সাগরতলে প্রবালসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রজাতির টিকে থাকা কঠিন হবে।

গত বছর ৬২০টি গবেষণার উপর ভিত্তি করে করা এক বিশ্লেষণে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের মহাসাগরগুলোর খাদ্য চক্র ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

/এফইউ/