দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেমিক-প্রেমিকা মিলছেন ৭০ বছর পর

বিশ্বযুদ্ধে আলাদা হয়ে যাওয়া প্রেমিকযুগল থমাস ও মরিস স্কাইপে কথা বলছেন১৯৪৪ সালের কথা। চারদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উত্তাপ। ক্ষমতার বিস্তার আর আধিপত্য জোরালো করার প্রশ্নে যখন পরাশক্তিগুলো যুদ্ধে উন্মত্ত, সেনারা যখন শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্যস্ত; তখনও মানব সত্তার শাঁসের ভেতরে জারি থাকা সহজাত অনুভূতি থেকেই প্রেমে পড়েন এক মার্কিন যোদ্ধা। নরউড থমাস নামের ওই যোদ্ধার বয়স তখন সবে ২১ পেরিয়েছে। আর তার প্রেমিকা জয়েস মরিসের বয়স ১৭। লন্ডনের একটি স্টেশনে প্রথম দেখা হয় তাদের। সেই থেকে শুরু প্রেম। তবে যুদ্ধের নির্মমতায় একটা সময় আলাদা হয়ে যান এই যুগল।
তারপর কেটে গেছে ৭০ বছর। তবে গত বছরের শেষের দিকে আবারও একে অপরকে খুঁজে পান থমাস ও মরিস। তবে সরাসরি নয়, ভার্চুয়াল জগতে। ইন্টারনেটে কথোপকথন হয় তাদের মধ্যে। তবে এবার সামনাসামনি মিলিত হতে যাচ্ছেন তারা। আসছে ভালোবাসা দিবসে অস্ট্রেলিয়ায় দেখা করবেন এ পৌঢ় প্রেমিক যুগল।  
থমাসের বয়স এখন ৯৩ বছর আর মরিসের বয়স ৮৮। দুজনেরই সন্তান আছে। তাদের প্রথম মিলিত হওয়ার ঘটনা খুব মজার। একদিন অস্ট্রেলিয়ায় নিজের বাড়িতে বসেই ছেলের কাছে বায়না ধরেন ৮৮ বছরের মরিস। অনলাইনে খোঁজ করতে হবে হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকের। মা আর ছেলে দুজন মিলে খুঁজেও পান থমাসকে। ৮৮ বছর বয়সে স্কাইডাইভিংয়ে যাওয়ার কারণে থমাস তখন খবরের পাতার শিরোনাম।

মরিস ও থমাসের ৭০ বছর আগেকার ছবি

মরিসকে খুঁজে পেয়েই তার সঙ্গে দেখা করতে চান থমাস। শুধু এক বার জড়িয়ে ধরবেন। তাদের স্বপ্নপূরণে স্কাইপ কল সেট আপ করেন থমাসের ছেলে স্টিভেন থমাস ও মরিসের ছেলে রবার্ট মরিস।

কী কথা হয়েছিল দু’জনের? স্কাইপ চ্যাট বলছে,

থমাস: তুমি আমাকে দেখতে পাচ্ছো?

মরিস: না, আমি পরিষ্কার দেখতে পাই না।

থমাস: আচ্ছা, আমি বলছি, আমি হাসছি…

মরিস: আমি জানি তুমি তাই করছো (হাসি)

সাত দশক পর মরিসের মুখে ‘টমি’ ডাক শুনে আপ্লুত হয়ে পড়েন থমাস। 

এদিকে প্রবীণ এ যুগলের প্রেমের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের সামনাসামনি মিলিত করতে স্কাইপে শুরু হয় ফান্ড রেইজিং ক্যাম্পেইন। তাদের মিলিত করার উদ্যোগে সাড়া দিয়েছে এয়ার নিউজিল্যান্ডও। থমাস আর তার ছেলের জন্য প্রথম শ্রেণির বিমানের টিকিট বিনামূল্যে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সূত্র: আনন্দবাজার, ডেইলি মেইল

 /এফইউ/বিএ/