নাইজেরিয়ায় লাসা জ্বরে শতাধিক মানুষের মৃত্যু

নাইজেরিয়ায় লাসা জ্বরের প্রাদুর্ভাবপশ্চিম আফ্রিকায় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়া লাসা জ্বরে নাইজেরিয়ায় গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর একইসময়ে নিশ্চিত কিংবা সন্দেহমূলক লাসা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৫ জনে। শনিবার নাইজেরিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত তথ্যের বরাতে খবরটি জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
নাইজেরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (এনসিডিসি) এর পরিসংখ্যানে বলা হয়, এ পর্যন্ত নাইজেরিয়ার ১৯টি রাজ্যে লাসা জ্বরে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে রাজনৈতিক রাজধানী আবুজা, লাগোসসহ ১৪টি রাজ্যে লাসা ভাইরাসের কারণে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিবেশী বেনিনে লাসা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বেনিনে সর্বশেষ ২০১৪ সালে লাসা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিলো।  
লাসা ভাইরাস এখন নিয়ন্ত্রণে আছে বলে নাইজেরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে ভাইরাসটির কারণে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে বেশি।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর পশ্চিম আফ্রিকায় ১ লাখ থেকে ৩ লাখ মানুষ লাসা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এরমধ্যে অন্তত ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

মারবুর্গ এবং ইবোলা ভাইরাসের সমগোত্রের ভাইরাস হলো লাসা। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে জ্বর, বমি এবং প্রদাহজনিত রক্তপাত হতে পারে।

১৯৬৯ সালে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় লাসা শহরে শনাক্ত হয় ভাইরাসটি। পরে শহরটির নাম অনুসারে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয়। ইঁদুরের প্রস্রাব-পায়খানার সঙ্গে খাবার কিংবা ঘরের জিনিসপত্র দূষিত হলে এর সংস্পর্শে আসার পর সংক্রমণ হতে পারে। এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে বের হওয়া রস বা ফ্লুইডের সংস্পর্শে আসলেও ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই লাসা জ্বরের উপসর্গ বোঝা যায় না। শনাক্ত করতে দেরি হলে শরীরের ভেতরেও রক্তক্ষরণ হতে পারে।
এনসিডিসির তথ্য অনুযায়ী গত বছর নাইজেরিয়াতে লাসা ভাইরাসে আক্রান্ত ৩৭৫ জনের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে ১২ জন। আর ২০১২ সালে ১,৭২৩ জন আক্রান্তের মধ্যে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছিলো।  সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

/এফইউ/