পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হলে কোথায় লুকাবেন বাইডেন?

ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়ার সামরিক অভিযান এখনও চলমান। যুদ্ধের এ পর্যায়ে ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ যুদ্ধের ময়দানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সামরিক বাহিনী বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে। পশ্চিমা শক্তিধর নেতারাও সতর্ক করে আসছেন যে, পুতিন ইউক্রেনে ব্যর্থ হয়ে তার বাহিনীকে পারমাণবিক হামলা চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন।

গত মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে বলেন, ‘রাশিয়া এবং দেশটির নাগরিকদের রক্ষায় সমস্ত উপায় ব্যবহার করতে পারেন। মস্কো যদি মনে করে তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়েছে, তাহলে আমাদের কাছে থাকা সব পদ্ধতি ব্যবহার করব। এটি শুধু কথার কথা না’।

শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজউইকের প্রতিবেদেন এসেছে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিতে রাশিয়াকে উদ্দেশ্য হাসিলের সুযোগ দেবে না যুক্তরাষ্ট্র, আর এ নিয়ে পরিকল্পনাও রয়েছে বাইডেন প্রশাসনের হাতে।

ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত বলে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ইতোমধ্যে পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির বিরোধী নেতা নিকোলে রাইবাকভ এবং পুতিন ঘনিষ্ঠ রমজান কাদিরভ। এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসনের কেমন ভূমিকা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।

পারমাণবিক সংঘাতের আশঙ্কার মধ্যে গত ৬ অক্টোবর মার্কিন প্রেসেডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, বিশ্ব পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনকি পুতিন কৌশলগতভাবে পারমাণবিক, জৈবিক বা রাসায়নিক অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কে কোনও রসিকতা করছেন না।

পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হলে মার্কিন প্রশাসন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে কোথায় যাবেন, এ নিয়ে ২০১৭ সালে একটি বই লিখেছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক গ্যারেট গ্রাফ। দ্য স্টোরি অব দ্য ইউএস গভর্নমেন্ট সিক্রেট প্ল্যান টু সেভ ইটসেলভ-উইল দ্য রেস্ট অব আস ডাই।

বইটি বের হওয়ার বছরেই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওতে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, র‍্যাভেন রক একটি বিশাল পবর্ত যা ভেতরে ফাঁপা। ওই পাহাড়ের ভেতর আলাদাভাবে তিনটি তিনতলা ভবন রয়েছে। অনেকটা ছোট একটি শহরের মতো। যেখানে দমকাল বিভাগ, পুলিশ, চিকিৎসা সুবিধা, ডাইনিং হল রয়েছে। পেনসিলভানিয়ার ফেয়ারফিল্ড শহরের কাছাকাছি অবস্থিত এটি।

র‍্যাভেন রক নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই স্থানীয়দের। ২০১৮ সালে ওই শহরের মেয়র রবার্ট স্ট্যানলি ফক্স-৪৩ কে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, অধিকাংশ লোকই জানেন না এটার ভেতরে কী রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে গত বুধবার নতুন একটি বই বের হয়েছে। সেখান থেকে কিছু বিষয় তুলে আনেন নিউ ইয়র্ক টাইমসের লেখক উইলিয়াম ডয়েল। মার্কিন প্রশাসন কীভাবে পারমাণবিক সংকটে র‍্যাভেন রককে ব্যবহার করতে পারে তার কিছুটা উল্লেখ করেন তিনি।

উইলিয়াম বলেন, পারমাণবিক ফুটবল (বিশেষ ব্রিফকেস) ও অন্যান্য যোগাযোগ যন্ত্রের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পেন্টাগনে জাতীয় সামরিক কমান্ড সেন্টারের সঙ্গে অডিও ও ভিডিও লিঙ্কে যুক্ত হবেন। পেন্টাগনের এই কক্ষটি ‘ওয়ার রুম’ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া নেব্রাস্কার ওমাহার দক্ষিণে অবস্থিত অফুট বিমানঘাঁটিতে অবস্থিত স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড হেডকোয়ার্টার্স বা স্ট্র্যাটকমের সঙ্গে যুক্ত হবেন। এখানেই যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে।

আমেরিকান ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসের শ্যারন ওয়েনারের মতে, মার্কিন সরকারের কন্টিনিউটি অব গভর্নমেন্ট (সিওজি) পরিকল্পনা রয়েছে।

সূত্র: নিউজউইক