সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগ্রাসী ধরনের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত। রবিবার (১৮ মে) তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ক্যান্সার তার অস্থিতে ছড়িয়ে গেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্রাবজনিত সমস্যা অনুভব করায় শুক্রবার পরীক্ষা করাতে যান ৮২ বছর বয়সী বাইডেন। এরপরই তার অসুখের তীব্রতা ধরা পড়ে। তিনি ও তার পরিবার এখন চিকিৎসার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করছেন।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাইডেনের ক্যান্সার অনেকটা তীব্র হলেও পরীক্ষায় দেখা গেছে, আক্রান্ত অংশ হরমোন সংবেদনশীল। তাই নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্যকর সম্ভাবনা আছে বলা আমরা আশাবাদী।
ক্যানসার শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়লে তাকে স্টেজ-৪ বা চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্যান্সার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সাধারণত প্রোস্টেট ক্যানসার আগেই শনাক্ত করা যায়।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্যমতে, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রোস্টেট ক্যানসারের দুই লাখ ৩৬ হাজার ৬৫৯টি কেস শনাক্ত হয়। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ রোগী প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত হয়েছিলেন। ৮ শতাংশের ক্ষেত্রে ক্যানসার মারাত্মক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।
বাইডেন ও তার সহধর্মিণী জিলের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাইডেনকে তুলোধুনো করার সুযোগ পেলে একবারও ছাড়েননি তিনি।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছেন, বাইডেনের অসুখে আমি আর মেলানিয়া দুঃখিত। জিল ও তার পরিবারের জন্য আমাদের আন্তরিক সহানুভূতি রইল। আমরা বাইডেনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হাসপাতালের ইউরোলজিস্ট ড. হারবার্ট লেপোর বলেন, বাইডেনের ক্যান্সার বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবে অনেকেই এই অবস্থায় পাঁচ থেকে ১০ বছর কিংবা তার বেশি সময় বেঁচে থাকেন।
নর্থওয়েস্টার্ন হেলথ নেটওয়ার্কের ক্যানসার প্রোগ্রামের চিকিৎসা পরিচালক ড. ক্রিস জর্জ বলেন, একবার হাড়ে ছড়িয়ে পড়লে প্রোস্টেট ক্যানসারকে আর নিরাময়যোগ্য বলা যায় না। তবে বিভিন্ন চিকিৎসায় এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
২০২০ সালে নির্বাচিত হওয়ার সময় বাইডেন ছিলেন সবচেয়ে বয়স্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে ২০২৪ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সী মার্কিন প্রেসিডেন্টের তকমা এখন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্পের দখলে।
ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে অনেকটা আড়ালেই সময় কাটাচ্ছেন বাইডেন। মাঝে অল্প কয়েকবার জনসম্মুখে এসেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। এরমধ্যে এপ্রিলে এক বক্তব্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ট্রাম্পের কাটছাঁটের সমালোচনা করেন তিনি।