আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) শ্রীলঙ্কার জন্য শনিবার (২৩ নভেম্বর) ২৯০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা প্যাকেজের তৃতীয় পর্যালোচনা অনুমোদন করেছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির অর্থনীতি এখনও ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে আইএমএফ জানায়, এই অনুমোদনের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কাকে আরও ৩০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার ছাড় করা হবে। ফলে এখন পর্যন্ত মোট ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড় হতে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তবে ঋণ পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আরও পদক্ষেপ প্রয়োজন। সংস্থাটি জানিয়েছে, এক হাজার ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার বন্ডহোল্ডার ঋণ এবং জাপান, চীন ও ভারতের মতো দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতাদের সঙ্গে এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পুনর্গঠন সম্পন্ন করলেই কেবল প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
গত বছরের মার্চে আইএমএফ থেকে এই সহায়তা প্যাকেজ নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কা তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ আর্থিক সংকট থেকে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে পেয়েছে। ২০২২ সালে দেশটি সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে।
আইএমএফের সিনিয়র মিশন চিফ পিটার ব্রুয়ার বলেছেন, কর রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে থাকা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার চালিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে দেশটি আগামী বছর তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৩ শতাংশ উদ্বৃত্ত অর্জনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্প কাঠামোর মধ্যে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে সরকার। তাদের অগ্রাধিকার ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি প্যাকেজ নিয়ে একমত হয়েছে আইএমএফ। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে চতুর্থ পর্যালোচনা শুরু হবে।
চলতি সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকে জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হবে। তিনি বছরের শেষ নাগাদ ঋণ পুনর্গঠন সম্পন্ন করার আশা প্রকাশ করেছেন।
২০২২ সালের আর্থিক সংকটের সময় ডলারের তীব্র ঘাটতিতে শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতি ৭০ শতাংশে পৌঁছে যায়, মুদ্রার মান রেকর্ড নিম্নস্তরে নেমে আসে এবং অর্থনীতি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়। গত বছর এই সংকোচনের হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রার মান ১১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি প্রায় শূন্যতে নেমে এসেছে। গত মাসে পণ্যের দাম শূন্য দশমিক আট শতাংশ কমেছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, তিন বছর পর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।