যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী বাজেটে প্রতিরক্ষা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বাড়িয়ে শিক্ষা, আবাসন এবং স্বাস্থ্য গবেষণা খাতে খরচ কমাতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বাজেটের আকার ১৬৩ বিলিয়ন ডলার সংকোচনে শুক্রবার (২ মে) একটি প্রস্তাব দেওয়া উত্থাপন করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির জন্য ২০২৫ সালে বরাদ্দের প্রায় ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
হোয়াইট হাউজের ব্যবস্থাপনা ও বাজেট কার্যালয় (অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট বা ওবিএম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা, মেডিকেয়ার প্রোগ্রাম এবং রাষ্ট্রীয় ঋণ পরিশোধ ব্যতীত যতরকম ঐচ্ছিক কর্মকাণ্ড (রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট নয়) রয়েছে, সে সব খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ২৩ শতাংশ হ্রাস করা হবে।
প্রশাসনের প্রস্তাবে আরও রয়েছে, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা থেকে দুই শতাধিক কোটি ডলার ছেঁটে দেওয়া হবে। এছাড়া, জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি) বরাদ্দ থেকে ৪০ শতাংশ হ্রাস করা হবে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসার পর এটি ট্রাম্পের প্রথম বাজেট প্রস্তাব। নির্বাচনি অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং আমলাতন্ত্র সংকোচনের কথা বিবেচনায় নিয়েই বাজেট প্রস্তাব করেছে তার প্রশাসন।
কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এই বাজেটের তীব্র সমালোচনা করেছেন। আবার রিপাবলিকান শিবিরে অনেকে প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে আরও বরাদ্দ চাচ্ছেন।
ওবিএমের পরিচালক রাস ভট বলেন, এখন আমাদের এমন একটি ঐতিহাসিক বাজেট দরকার, যা আমাদের অধঃপতনের জন্য অর্থ ব্যয় বন্ধ করবে, মার্কিনিদের অগ্রাধিকার দেবে এবং সামরিক ও জাতীয় নিরাপত্তায় সমর্থন দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ বর্তমানে ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাজেট বিশ্লেষক ও কিছু রক্ষণশীল রাজনীতিকরা আশঙ্কা করছেন যে, ট্রাম্প তার ২০১৭ সালের কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়াতে চাইলে এই ঋণের বোঝা আরও বাড়বে।
সিনেটের শীর্ষ বাজেট প্রণয়নকারী রিপাবলিকান সদস্য সুসান কলিন্স বলেছেন, প্রস্তাব জমা পড়তে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া, অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখনও অস্পষ্ট রয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ যথেষ্ট নয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ঘর উষ্ণ রাখার জন্য প্রস্তাবে যথেষ্ট বরাদ্দ নেই বলে আমার আশঙ্কা।
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবনা কংগ্রেসে অনুমোদিত হতে হবে বলে উল্লেখ করে কলিন্স বলেছেন, শেষ পর্যন্ত বাজেট বরাদ্দের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতেই রয়েছে।