দুর্নীতির অভিযোগ আনায় সিনেটরের বিরুদ্ধে দিলমার আইনী ব্যবস্থা

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ জানিয়েছেন, তিনি এক সিনেটরের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিবেন। ওই সিনেটর দিলমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, তিনি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোবাসে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।

সিনেটর ডেলসিও অ্যামারাল বলেছেন, প্রেসিডেন্ট অনিয়মের বিষয়ে সবই জানতেন এবং তদন্তে হস্তক্ষেপ করেছেন। তবে দিলমা ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ম্যাগাজিনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিনেটর অ্যামারাল তাকে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন আর এজন্য তিনি আইনী ব্যবস্থা নেবেন। উল্লেখ্য, ডেলসিও অ্যামারাল এবং দিলমা রুসেফ উভয়েই ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা। 

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ

নতুন আইনমন্ত্রী ইউজেনিও অ্যারাগাও হুমকি দিয়েছেন, আর কোনও প্রমাণ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হলে তিনি পেট্রোবাসে চলমান তদন্ত থামিয়ে দেবেন। তদন্তাধীন বিষয়ের প্রমাণ, যার গ্রহণযোগ্যতাও প্রমাণিত হয়নি, তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করাতে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

এদিকে, গত বুধবার দিলমা রুসেফ লুলা দা সিলভাকে নিজের চিফ অব স্টাফ নিয়োগ দেন। এই নিয়োগের কয়েক ঘণ্টা পরই লুলার বিরুদ্ধে পেট্রোবাস কেলেঙ্কারি তদন্তের প্রধান পুলিশকে নির্দেশ দেন দিলমা রুসেফ ও লুলার কথোপকথনের একটি রেকর্ড প্রকাশ করতে। ওই কথোপকথনে ইঙ্গিত মেলে দুর্নীতি মামলায় লুলার গ্রেফতার হওয়া ঠেকাতে দিলমা তাকে সরকারে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেন।

এর আগে ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে লুলা দা সিলভাকে দুর্নীতির দায়ে আটক করে পুলিশ। পেট্রোবাসের বিশাল অঙ্কের ঘুষ কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হলেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ব্রাজিলে গত কয়েক বছর ধরে পেট্রোব্রাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং-এর অভিযোগ তদন্ত করছে পুলিশ।

গত ৯ মার্চ লুলার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ গঠন করেন সাও পাওলোর প্রসিকিউটররা। পরদিন, ১০ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে তার গ্রেফতার দাবি করেন তারা। অর্থপাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লুলাকে ‘আইনি হেফাজতে’ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

ব্রাজিলের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা লুলা দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন শেষে ২০১১ সালে নিজ দলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী দিলমা রুসেফ-এর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। তার শাসনামলে দেশে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় এবং লাখ লাখ মানুষ দারিদ্রের অভিশাপ থেকে মুক্তি পান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পেট্রোব্রাস দুর্নীতিতে তার জড়িত থাকার গুঞ্জন ওঠার পর লুলার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। তবে লুলা এবং তার সমর্থকরা এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন।

/এসএ/