শরণার্থী সংকট

ইইউ-তুরস্ক চুক্তিতে গ্রিসে শরণার্থীদের ঢল, ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ

শরণার্থী সংকট নিরসনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তুরস্কের মধ্যকার চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়ার পর বিপুল পরিমাণ মানুষের ঢল নেমেছে গ্রিসে। আর এজন্য ওই চুক্তি কার্যকর করতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছে গ্রিস কর্তৃপক্ষ।  চুক্তির আওতায় এখন যদি কোনও শরণার্থী গ্রিসে প্রবেশ করে আশ্রয়ের আবেদন না করেন, অথবা সেই আবেদন খারিজ করা হয়, তাহলে তাকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হবে। এরই মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে এই চুক্তির বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদও করেছেন।

ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল

চুক্তি অনুসারে প্রত্যেক সিরীয়কে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হবে এবং সেখানে তার থাকার ব্যবস্থা করা হবে ইইউর তত্ত্বাবধানে। কিন্তু চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ওই শরণার্থীদের কিভাবে ফেরত পাঠানো হবে, সে সম্পর্কে এখনও গ্রিস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। প্রায় ২ হাজার ৩০০ বিশেষজ্ঞের একটি দল গ্রিসে পাঠানো হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার জন্য। চুক্তি অনুযায়ী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পারি দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হবে। এর বিনিময়ে তুরস্ককে আর্থিক এবং রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়া হবে।

লন্ডনে শরণার্থীদের সমর্থনে মিছিল

গ্রিসের শরণার্থী বিষয়ক মুখপাত্র জিওর্জস কিরিতসিস সংবাদমাধ্যম এএফপিকে জানিয়েছেন, এমন একটি পরিকল্পনা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। গ্রিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার অন্তত দেড় হাজার শরণার্থী গ্রিস সীমান্তে প্রবেশ করেছেন। যা অন্যান্য দিনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। তুরস্কের আনাদোলু সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, চুক্তি কার্যকরের মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে চার বছরের এক শিশু সাগরে ডুবে মারা যায়।

এদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ অন্যান্য মানবাধিকারকর্মীরা ইউরোপজুড়ে এই চুক্তি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। শনিবার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এবং শরণার্থীদের সমর্থনে লন্ডন, এথেন্স, বার্সেলোনা, আমস্টারডাম, জেনেভা এবং অন্য অনেক শহরে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ মিছিল বেরিয়েছে। গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে প্রতিবাদ মিছিলে কিছু আফগান শরণার্থীও যোগ দেন। তারা ‘সীমান্ত খুলে দাও’, ‘আমরাও মানুষ, আমাদেরও অধিকার আছে’ বলে স্লোগান দেন। লন্ডনে প্রায় ৪ হাজার মানুষের মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘শরণার্থীদের স্বাগতম’, ‘বর্ণবাদ রুখে দাঁড়াও’।

এথেন্সে প্রতিবাদ মিছিল

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের তথ্যমতে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ লাখ শরণার্থী সমুদ্রপথে তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করেছেন। চলতি বছরে ১ লাখ ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে ইউরোপে পারি জমিয়েছে। যেখানে ৪৬০ জনের প্রাণহানি ঘটে। সূত্র: বিবিসি।

/এসএ/বিএ/