আয়ারল্যান্ডে মানুষের অস্তিত্বের নতুন রূপরেখা

গবেষকদের একটি দল দাবি করেছে, আয়ারল্যান্ডে প্রায় সাড়ে বারো হাজার বছর আগেও মানুষের অস্তিত্ব ছিল। যা এর আগে ধারণা করা সময়কাল থেকেও আড়াই হাজার বছর বেশি। এর আগেকার গবেষণাগুলোয় দাবি করা হয়েছিল, আয়ারল্যান্ডে মানব অস্তিত্ব প্রায় দশ হাজার বছর পুরনো। প্রামাণ্য তথ্যগুলো ৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বেশি পুরনো ছিল না।

সম্প্রতি এক গবেষণায় ভাল্লুকের একটি হাড়ের রেডিওকার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, ভাল্লুকটি ১০৫০০ থেকে ১২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে মানুষের শিকারে পরিণত হয়।

আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে রক্ষিত আদিম যুগের ভাল্লুকের হাড়

ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি স্লিগোর প্রত্নতত্ত্ববিদ ম্যারিয়ন ডোড এই গবেষণার খোলাসা করে বলেন, ‘এই আবিষ্কার আয়ারল্যান্ডে মানব ইতিহাসের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’

ওই হাড়টি ১৯০৩ সালে আয়ারল্যান্ডের পশ্চিম তীরে আরও অনেক হাড়ের সাথেই খুঁজে পাওয়া যায়। হাড়টি কোনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে। হাড়টি ১৯২০ সাল থেকে আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে।

দুই গবেষক ডোড এবং রুথ কারডেন হাড়টিকে পুনরায় পরীক্ষার পর তা রেডিওকার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে তার বয়স নির্ধারণ করার অনুরোধ করেন। রেডিওকার্বন পরীক্ষার জন্য আরেকটি নমুনা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পাঠানো হয়। কিন্তু দুটো পরীক্ষার ফলাফলেই দেখা যায়, এই হাঁড়টি কোনও ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে মানুষের দ্বারা কাটা হয়েছে প্রায় সাড়ে বারো হাজার বছর আগে।  

তিনজন বিশেষজ্ঞ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে, যখন ওই হাড়টি তাজা ছিল, আর তখনই এর ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।

রুথ কারডেন বলেন, ‘প্রাণিবিদ্যার গবেষণায় এই আবিষ্কার খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। এই গবেষণাপত্র নিয়ে অবশ্যই অনেক আলোচনা হবে। আর গণ্ডির বাইরে চিন্তা করার এখনই সময়।’ গবেষকদের ওই গবেষণাপত্রটি কুয়াটারনারি সায়েন্স রিভিউজে প্রকাশিত হয়।

আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কাছে এখনও প্রায় ২০ লাখ নমুনা রয়েছে। এতে গবেষণা চালিয়ে আরও রহস্য আন্মোচিত হতে পারে। মিউজিয়ামের তত্ত্বাবধায়ক নাইজেল মোনাগান বলেছেন, ‘এসব নমুনার সবগুলোই গবেষণার জন্য উন্মুক্ত। আমরা জানি না, কোনটা থেকে নতুন তথ্য আবিষ্কার হতে পারে।’ সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এসএ/বিএ/