যুক্তরাষ্ট্রের ‘সংবেদনশীল’ দেশের তালিকায় দক্ষিণ কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের এশীয় মিত্র দক্ষিণ কোরিয়াকে সংবেদনশীল দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের (ডিওই) এক মুখপাত্র শুক্রবার (১৪ মার্চ) এ কথা বলেছেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে লিখিত বিবৃতিতে ডিওই জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন শেষ মুহূর্তে দক্ষিণ কোরিয়াকে এই তালিকা নিম্নতম স্তরে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তবে সিউলকে এই তালিকাভুক্ত করার কারণ ওই জানানো হয়নি। এছাড়া, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিউলের অবস্থানের কোনও পরিবর্তন করবেন কিনা সেটাও নিশ্চিত নয়।

অবশ্য তালিকাভুক্তির পরও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় সিউলের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি ওয়াশিংটন।

এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পায়নি রয়টার্স।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনৈতিক কর্মকর্তার বরাতে দেশটির বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ দাবি করেছে, তালিকায় অন্তর্ভুক্তি পর আগামী ১৫ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ার এই নতুন অবস্থান কার্যকর হবে। তার আগেই বিষয়টির সুরাহা করার জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করছে সিউল।

২০১৭ সালে ডিওই এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নথি অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের সংবেদনশীল দেশের তালিকায় রয়েছে চীন, তাইওয়ান, ইসরায়েল, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া। এরমধ্যে শেষোক্ত দুটিকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ও তখনকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন বলেছিলে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমের কারণে দক্ষিণ কোরিয়াও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের দিকে যেতে পারে।

তবে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তির মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা থেকে সরে আসে তারা। চুক্তি অনুযায়ী, পারমাণবিক হামলা নিবৃত্তকরণ পরিকল্পনার বিষয়ে সিউলের সঙ্গে আরও বেশি তথ্য আদান-প্রদান করবে ওয়াশিংটন। বিনিময়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।

এদিকে, হোয়াইট হাউজের দাবি, সংবেদনশীল তালিকায় অন্তর্ভুক্তি মানেই সেই দেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক শত্রুভাবাপন্ন হয়ে যাবে না। জাতীয় নিরাপত্তা, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন বা সন্ত্রাসবাদে সমর্থনসহ একাধিক কারণে এই তালিকায় কোনও দেশকে রাখা হতে পারে। তবে তালিকায় থাকলেই সেই দেশের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহযোগিতা স্থগিত হয়ে যায় না।

ডিওই এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহযোগিতায় এখনও কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। তাদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সামনে অগ্রসর হতে আমরা আগ্রহী।

সহযোগিতায় বাধা না থাকলেও সংবেদনশীল তালিকাভুক্ত দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণভাবে কিছু বিষয় যাচাই করে দেখা হয় বলে জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।