রাশিয়ার প্রস্তাবিত সাময়িক যুদ্ধবিরতি তারাই ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। দেশটির জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলের গভর্নর শুক্রবার দাবি করেছেন, একটি ফ্রন্টলাইনের নিকটবর্তী বসতিতে দুই শতাধিক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে তিনি দাবি করেন, বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেড়শ ড্রোন ও ৭০টি গোলা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২২০ বার হামলা করেছে ক্রেমলিন।
বৃহস্পতিবার থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে তিনদিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ৯ম মে দিনটি নিয়মিত উদ্যাপন করে থাকে মস্কো। এই দিনটি মাথায় রেখে মাসখানেক আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তিনদিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তাব করেছিলেন।
ক্রেমলিন থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ৮ মে থেকে ১১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত মানবিক কারণে ইউক্রেনে সবরকম সামরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখবে রাশিয়া।
যথাসময়েই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে বলে দাবি করেছে রুশ বার্তাসংস্থা তাস। তবে ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, নিজেদের বন্দোবস্ত লঙ্ঘন করে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। এই সময়ের মধ্যেও ইউক্রেনের একাধিক শহরে রুশ হামলা করা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে দাবি করা হয়, দেশটির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সুমি এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় মিকোলায়েভে গাইডেড বোমা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
খেরসনের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেখানকার একটা গ্রামে ড্রোন হামলা ৫৫ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছেন। গ্রামের আশেপাশের আকাশসীমায় আরও বেশকিছু ড্রোনের উপস্থিতি চোখে পড়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
এসব দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি সিএনএন।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা ভিকতর ত্রেবুগোভ বলেছেন, দেশের অনেক স্থানে পরিস্থিতি শান্ত ছিল। তবে কিছু এলাকায় আক্রমণাত্মক পরিবেশ এখনও বজায় রয়েছে। ফলে, যুদ্ধবিরতি নয়, বরং বলা যেতে পারে কম সামরিক কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করা গেছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য ইউক্রেনকেই বরং দায়ী করেছে রাশিয়া। তারা হুঁশিয়ার দিয়ে বলেছে, মস্কোর বাহিনী হামলা স্থগিত রাখলেও ইউক্রেনের দিক থেকে কোনও সংযমের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাদের কৃতকর্মের যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।