লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর বৈরুতে প্রথম ইসরায়েলি হামলা

গাজার পর এবার লেবাননেও হামলা শুরু করলো ইসরায়েল। বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলিতে শুক্রবার (২৮ মার্চ) ব্যাপক আকারে বিমান হামলা চালিয়েছে তেল আবিব। কয়েকমাসের বিরতি থাকার পর এই হামলা দুপক্ষের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিল। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

লেবানন থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশে রকেট হামলার জবাবে এই হামলা পরিচালনা করা হয় বলে দাবি করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হুমকি প্রতিরোধ ও যুদ্ধবিরতির শর্ত বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনে লেবাননের যে কোনও স্থানে হামলা করতে তারা প্রস্তুত আছেন।

তিনি আরও বলেছেন, লেবাননের পরিস্থিতি থেকেও এতদিন যারা শিক্ষা নিতে পারেনি, এই হামলার কারণে তারা আমাদের অঙ্গীকার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হবে। আমাদের নাগরিকদের বিরুদ্ধে আঘাত, সেটা যত সামান্যই হোক, আমরা মেনে নেব না।

রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলি দাহিয়েহের এক ভবনে ওই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের দাবি, ওই ভবনটি ড্রোন সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। দাহিয়েহ এলাকা হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

গত বছর বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলিতে প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্ব প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এরকমই এক হামলায় দলটির তিন দশকের নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হন।

অবশেষে গত নভেম্বরে ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্তে বলা হয়, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল হিজবুল্লাহ মুক্ত এবং দলটির অস্ত্রশস্ত্র জব্দ বা ধ্বংস করতে হবে। এছাড়া, ওই অঞ্চলে লেবানিজ সেনাবাহিনী মোতায়েন করলে ইসরায়েলি বাহিনী সেখান থেকে পিছু হটবে। তবে উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগ করে থাকে।

বিগত সপ্তাহগুলোতে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। শর্ত মোতাবেক সেনা অপসারণে গড়িমসি করেছে ইসরায়েল। তাদের অভিযোগ, হিজবুল্লাহকে নিষ্ক্রিয় করতে লেবানিজ সেনা মোতায়েন করা হয়নি।

এরমধ্যেই গত ২২ মার্চ তেল আবিব অভিযোগ করে, তাদের সেনাবাহিনী একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধ করেছে। বৈরুত থেকে ওই হামলা করা হয়েছে দাবি করে শুক্রবার বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।

হামলার সঙ্গে কোনও সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ।

এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়নি। তবে লেবানিজ আর্মি দাবি করেছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার স্থান চিহ্নিত করতে পেরেছে। হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।