যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক বিরোধ মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশে নজর চীনের

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশে যাচ্ছেন। এটি হবে ২০২৫ সালের তার প্রথম বিদেশ সফর। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক উত্তেজনা বৃদ্ধির সময়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করাই তার প্রধান লক্ষ্য বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, সফরে ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল ভিয়েতনাম অবস্থান করবেন শি। আর ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল মালয়েশিয়া এবং কম্বোডিয়া সফর করবেন। চলতি সপ্তাহেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।

সম্প্রতি চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়েছে বেইজিং। ফলে দুদেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এদিকে, গত ২ এপ্রিল কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার ওপর যথাক্রমে ৪৯, ৪৬ ও ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন প্রশাসন। এই বাড়তি শুল্ক থেকে বাঁচতে হোয়াইট হাউজের সঙ্গে দেনদরবার ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছে তারা। ফলে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলাকালীন এমনিতেই গ্যাঁড়াকলে থাকা চীন আরও একঘরে হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

চীনের পক্ষে উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে সফর করতে যাচ্ছেন শি। কম্বোডিয়া এবং মালয়েশিয়ায় যথাক্রমে নয় এবং বারো বছর সর্বশেষ সফরে গিয়েছিলেন শি। অবশ্য, ভিয়েতনামের সঙ্গে সে তুলনায় তার যোগাযোগ আরেকটু তরতাজা আছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দেশটিতে সফরে করেছিলেন শি।

ভিয়েতনামের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে সোমবার ৪০টির মতো চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি কার্যকরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়। তবে চীনকে এই আদেশের বাইরে রেখেছেন তিনি। ফলে, কয়েকদিন ধরে চড়া শুল্কের বোঝা বইছে বেইজিং।

বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক জোটকে যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্কের বিরুদ্ধে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল চীন। জোটবদ্ধ হওয়ার আশায় দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনটাও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও বৈঠক করেছেন।

এছাড়া, চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। একটি শক্তিশালী, সংস্কারিত, ন্যায়সংগত এবং সমতা ভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যবস্থা বজায় রাখার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।